দাম্পত্য জীবন মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দাম্পত্য জীবনে সবাই সুখী হতে পারে না। অনেক সময় আয়-রোজকার ভালো করলেও কিছু কারণে সংসারে উন্নতি হয় না। এ বিষয়ে হাদিসের বর্ণনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সংসারে উন্নতি না হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করে যেসব অভ্যাস—
যিনি সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠেন, তার যে কোনো কাজে রয়েছে বরকত। সংসারের জন্যও তা প্রযোজ্য। সকাল সকাল কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরে নবীজি হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতকে ভোরের (সকালের) বরকত দান করুন।
এ ছাড়া তিনি কোনো ছোট কিংবা বড় ক্যারাভান (মরুযাত্রীদল) কোথাও পাঠালে দিনের প্রথমভাগেই পাঠাতেন। (হাদিসটির) বর্ণনাকারী নিজে একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার পণ্যদ্রব্য দিনের প্রথমভাগে (ভোরে) পাঠাতেন, ফলে তিনি সম্পদশালী হয়েছিলেন এবং এভাবে তিনি অনেক সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন। (আবু দাউদ ২৬০৬)
হজরত আনাস ইবনু মালিক (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আর যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে দুনিয়া, আল্লাহতায়ালা সেই ব্যক্তির গরিবি ও অভাব-অনটন দুচোখের সামনে লাগিয়ে রাখবেন এবং তার কাজগুলো এলোমেলো ও ছিন্নভিন্ন করে দেবেন। তার জন্য যা নির্দিষ্ট রয়েছে, দুনিয়াতে সে এর চাইতে বেশি পাবে না।’ (তিরমিজি ২৪৬৫)
অনেকেই অলসতা করে সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করে না, তাদের নামাজ কবুল হবে না। দুনিয়াতে তাদের সংসারেও উন্নতি হবে না। কেননা তারা নামাজ সম্পর্কে উদাসীন। তাদের জন্য পরকালে শাস্তি রয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এরপর দুর্ভোগ ওই সব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন।’ (সুরা মাউন : আয়াত ৪-৫)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতে মগ্ন হও। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করব এবং তোমার গরিবানা হাল দূর করব। তুমি যদি তা না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর পেরেশানি দিয়ে পূর্ণ করব এবং তোমার গরিবি দূর করব না। (ইবনে মাজাহ ৪১০৭, তিরমিজি ২৪৬৬)
ফজরের নামাজ কাজা করলে মহান আল্লাহতায়ালার রহমত থেকে বঞ্চিত হতে হয়। কারণ ফজরের নামাজ দিয়ে সকালবেলা বরকত ও রহমতের দিন শুরু হয়। ফজরের নামাজ কাজা করায় সংসারের যাবতীয় রহমত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
দান-সদকায় সম্পদে বরকত হয়। তাই কেউ যদি দান-সদকা না করে, তবে তার সংসারেও উন্নতি হয় না।
অনেক দম্পতি রয়েছে, যেখানে নারীরা নিজেদের পুরুষের চেয়ে বেশি বিচক্ষণ মনে করে। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের আগে সমাজে নারীর শাসন চলবে’। এমনটি হলে ওই সংসারে উন্নতি আসবে না।
মন্তব্য করুন