ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার সমস্যা আমাদের অনেকেরই রয়েছে। নাক ডাকার শব্দ নানা রকমের হতে পারে। মৃদু থেকে শুরু করে নাক ডাকার আওয়াজ বিকট হতে পারে। এক্ষেত্রে যিনি নাক ডাকছেন তার কোনো সমস্যা না হলেও পাশে থাকা মানুষটির ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাক ডাকার সমস্যা থাকলে তা সমাধান করা জরুরি। কারণ, নাক ডাকার কারণে শুধু আপনার পাশে থাকা মানুষটির সমস্যা হচ্ছে বিষয়টি তা নয়; পাশাপাশি আপনার শরীরের কিছু সমস্যার দিকেও ইঙ্গিত করছে। তাই এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করার আগেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন।
নাক ডাকার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি কারণ হলো—
- অনেক সময় নাকের ভেতরের মাংস বেড়ে গেলে নাকের নালি ছোট হয়ে যায়। এতে নাকের ভেতর শ্বাসে বাধার সৃষ্টি করে তখন মানুষ নাক ডাকে।
- শরীরের ওজন বেড়ে গেলে আমাদের নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রয়েছে গলার চারপাশে চর্বি জমা। এতে গলার পেশির নমনীয়তা অনেকটা কমে যায়, তখন নাক ডাকার মতো সমস্যা হতে পারে।
- অনেকের জন্মগত কারণে শ্বাসতন্ত্র বা চোয়ালের সমস্যা থাকলে তারা নাক ডাকতে পারে।
- অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করলে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
- থাইরয়েড বা গ্রোথ হরমোনের আধিক্যজনিত কোনো সমস্যা থাকলে নাক ডাকতে পারে।
- আমাদের অনেকেরই চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস আছে। চিত হয়ে ঘুমালে জিহ্বা পেছনের দিকে গিয়ে শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে যেতে পারে আর তখনই মানুষ নাক ডাকে।
নাক ডাকার সমস্যা সমাধানে ঘুমানোর পদ্ধতি পরিবর্তন করতে পারেন। পাশ ফিরে ঘুমালে এ সমস্যা অনেকটা কমতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিত হয়ে শোয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে ঘুমানোর সময় পায়জামায় কোমরের কাছে একটি টেনিস বল রাখতে পারেন। এতে চিত হয়ে ঘুমানো অনেকটা কমতে পারে।
আমরা আগেই আলোচনা করেছি নাক ডাকার সমস্যার একটি কারণ হলো অতিরিক্ত ওজন। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করতে হবে। যেসব খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভাবনা আছে সেগুলো ত্যাগ করতে হবে।
অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করলে আমাদের জিহ্বার পেশিগুলো শিথিল হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের শ্বাসনালি সংকোচিত হয়ে যায়। তখনই আমরা মূলত নাক ডাকি। তাই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে এখন থেকেই এ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা উচিত।
ঠিকমতো ঘুম না হওয়া নাক ডাকার একটি অন্যতম কারণ। আমরা অনেকেই ভালো ঘুমাই না। তাই প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট সময় পর ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। এতে নাক ডাকার সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
নাক ডাকার সমস্যা দূর করতে ঘুমানোর আগে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।
এসব পদ্ধতি মেনে চললে নাক ডাকার সমস্যা অনেকটা দূর হয়ে যেতে পারে। এরপরেও যদি নাক ডাকার সমস্যা না কমে তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
মন্তব্য করুন