ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর পোশাক শ্রমিক মেজবাহুল (১৭)-কে জবাই করে হত্যার ২৪ দিন পর মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
হত্যাকাণ্ডের পর অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪ ছায়া তদন্ত শুরু করেন এবং শনিবার (২৪ আগস্ট) আশুলিয়ার বাইপাইল নামাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন জয়পুরহাট জেলার ইয়াসিন আরাফাত (২২), বরগুনা জেলার তামিম আকন (১৮) এবং ফরিদপুর জেলার মুন্না মুন্সি (১৯)।
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে র্যাব-৪ সিপিসি-২ সাভার নবীনগর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি মো. সাজ্জাদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে স্কোয়াড কমান্ডার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা গত ৩০ জুলাই ২০২৪ মেজবাহুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার পরিবার খোঁজে পাচ্ছিল না মেজবাহুলকে। পরে মেজবাহুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি রিসিভ করেন গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা। তারা ২৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফোনটি বন্ধ করে দেয়। এর পর আর মেসবাহুলের সাথে তার পরিবার কোনোরকম যোগাযোগ করতে পারেনি।
এদিকে, গত ১৯ আগস্ট মেজবাহুলের পরিবার জানতে পারেন মেজবাহুলকে জবাই করে হত্যা করে লাশ আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার একটি কাঠবাগানে ফেলে রাখে।
এ বিষয়ে ভিক্টিমের পরিবার আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করলে আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায়, গত ৩১ জুলাই বাড়ইপাড়ায় অজ্ঞাতনামা পাওয়া লাশটি টাংগাইলের জনৈক এক ব্যক্তি তার নিখোঁজ হওয়া ছেলের দাবি করে নিয়ে যান এবং টাংগাইলে দাফন করেন।
পরে তার পরিবার ও আশুলিয়া থানা পুলিশ টাংগাইলে যোগাযোগ করে জানতে পারেন দাফন করা লাশটি নিখোঁজ হওয়া তার ছেলের নয় বরং তার ছেলে নিখোঁজের কয়েকদিন পর সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে এসেছে। পরে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেজবাহুলের লাশ তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন এবং পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা এবং একই সাথে চাকরি করার সুবাদে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে মেজবাহুলকে অপহরণ করে হত্যার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। এর সূত্র ধরে গত ৩০ জুলাই বিকেলে মেজবাহুলকে বেড়ানোর কথা বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে মুঠোফোনে মুক্তিপণ দাবি করে না পেয়ে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মেজবাহুলের লাশ বাড়ইপাড়ার একটি কাঠবাগানে ফেলে রাখে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাব।
মন্তব্য করুন