অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকায় আরেকটি ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) গবেষকরা করোনার এ টিকায় ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া অ্যান্ড থ্রোমবোসিসের (ভিআইটিটি) ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বলে জানান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া অ্যান্ড থ্রোমবোসিস (ভিআইটিটি) হলো মারাত্মক রক্ত জমাট বাঁধার বিরল রোগ।
ভিআইটিটি নামের এ রোগটি চিকিৎসাবজ্ঞিানে নতুন নয়। তবে করোনার পর এটি নতুন করে আবারও শনাক্ত হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকোর করোনার টিকা ইউরোপে ভ্যাক্সজেভরিয়া এবং এশিয়ার দেশগুলো কোভিশিল্ড নামে বাজারজাত করা হয়েছে।
গবেষকরা বলেন, প্লাটিলেট ফ্যাক্টর ৪ (বা পিএফ৪) নামক প্রোটিনের বিরুদ্ধে নির্দেশিত একটি অস্বাভাবিক বিপজ্জনক রক্তের অটোঅ্যান্টিবডি ভিভিআইটির কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে।
২০২৩ সালে পৃথক গবেষণায়, কানাডা, উত্তর আমেরিকা, জার্মানি এবং ইতালির বিজ্ঞানীরা একই পিএফ৪ অ্যান্টিবডিসহ একই ধরনের ব্যাধির কথা জানান। এটি সাধারণ ঠান্ডার মাধ্যমে সংক্রমণের পর কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল।
এর আগে করোনার টিকা কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, এ টিকার ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ টিকার কারণে ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ (টিটিএস) হতে পারে।
টিটএস বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটি রোগ। যার ফলে রক্তে জমাট বাঁধতে পারে। কর্তৃপক্ষের এমন স্বীকারোক্তির পর টিকা গ্রহণকারীরা কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। কেননা বাংলাদেশ ও ভারতের অনেকে এ টিকা গ্রহণ করেছেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঈশ্বর গিলাদা জানান, থ্রোম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক সিনড্রোম হলো বিরল। কিন্তু এর প্রভাব গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাত্র ০.০০২ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ প্রতি ৫০ হাজার লোকের মধ্যে একজনেরও কম মানুষ এমন ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। করোনার এ টিকা উৎপাদন করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশকে এটি প্রয়োগ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন