অপরিকল্পিত নগরায়ণ, কলকারখানা, অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন কারণে দেশে ব্যাপক বায়ুদূষণ বেড়েছে। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে। নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ধুলাবালি, রাসায়নিক উপাদান শরীরে প্রবেশ করায় বাঁধছে বিভিন্ন রোগ। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে শ্বাসকষ্ট। বায়ুদূষণ ছাড়া আরও নানা কারণে এই রোগ হতে পারে। যেমন—ফুসফুসে সংক্রমণ, আবহাওয়ার প্রভাব, খাদ্যাভ্যাস, অ্যালার্জি প্রভৃতি। শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে না পারা, শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া রেসপিরেটরি ডিসট্রেস নামেও পরিচিত। এসব রোগীর হুটহাট শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এই রোগে শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ ভুগতে পারেন।
এ বিষয়ে বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. মোস্তাফিজুর রহমান কালবেলা অনলাইনকে বলেন, অ্যাজমা হলে শ্বাসকষ্ট হয়। তবে সব শ্বাসকষ্ট কিন্তু অ্যাজমা নয়। শ্বাসকষ্ট বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে আমাদের দেশে বায়ুদূষণের ফলে এ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
* হাঁপানি বা অ্যালার্জি থাকলে। * ঠান্ডা লাগলে অনেকের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। * এডিনয়েড থাকলে। * অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলে। * সাইনোসাইটিস, হার্ট ফেইলিওর, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগ দেখা দিলে। * ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি)।
আরও অনেক কারণে শ্বাসকষ্টের অনুভূতি হতে পারে। জ্বরসহ বেশকিছু শারীরিক রোগেও শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর দহন বা মেটাবলিজম বেড়ে যাওয়ার জন্য নিঃশ্বাসের হার বেড়ে যায়। হাইপারভেন্টিলেশন সিনড্রোমের কারণটা যদিও খুব স্পষ্ট নয়, তবে এটার সঙ্গে উৎকণ্ঠা আর এক ধরনের ভয় পাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
* হাঁপানি থাকলে চিকিৎসা করা। * ধূমপান পরিহার করা। * অ্যালার্জি থাকলে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে এমন বস্তু ও খাবার এড়িয়ে চলা। * শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। * ঘর গোছানোর সময় বা বাইরে গেলে ডাস্ট মাস্ক পরে বের হওয়া। * ঘরবাড়ি সব সময় পরিষ্কার ও ধুলামুক্ত রাখা।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রান্নাঘরে থাকা সাধারণ কিছু খাবার শ্বাসকষ্ট কমাতে দারুণ কাজে আসে। যখনই দেখবেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, তখনই এই খাবারগুলোর যে কোনো একটি খেয়ে নেবেন। এতে ভালো ফল পাওয়া যাবে। আদা :
ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আদায় থাকা বেশ কিছু উপকারী উপাদান শ্বাসনালির প্রদাহ কমায়। ফলে শ্বাসনালিতে অক্সিজেনের প্রবেশ ঠিকমতো ঘটে। তখন স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট কমতে শুরু করে।
সরিষার তেল :
শ্বাসকষ্ট কমাতে আরেকটি দারুণ উপকারী উপাদান হচ্ছে সরিষার তেল। শ্বাসকষ্ট হলেই অল্প করে সরিষার তেল গরম করে বুকে-পিঠে ভালো করে মালিশ করতে থাকবেন। এই তেলটি রেসপিরেটরি প্যাসেজকে খুলে দেয়। ফলে শ্বাসকষ্ট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
রসুন :
হাফ কাপ দুধে পরিমাণমতো রসুন ফেলে ভালো করে দুধটা ফুটিয়ে নিন। এরপর কিছুটা ঠান্ডা করে খেয়ে ফেলুন। খাওয়ার পর দেখবেন শ্বাসকষ্ট কমতে শুরু করেছে।
পেঁয়াজ :
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শ্বাসনালির প্রদাহ কমিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
মন্তব্য করুন