ব্যথায় ভোগা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বৈ কমছে না। ব্যথা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোমরের ব্যথা বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয়। কোমরের ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে আরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কোমরের ব্যথার কারণে অনেকেই ঠিকমতো বসতে পারেন না, আবার বসলে ঠিকভাবে উঠতে পারেন না। এ জন্য এ সমস্যায় যারা আক্রান্ত, তাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সেই সঙ্গে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার রাস্তাও খুঁজতে হবে।
কোমরের ব্যথা বা যে কোনো ব্যথায় অনেকেই পেইনকিলার খেতে ভালোবাসেন। এতে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যথা চলে গেলেও মূলত সেই ব্যথা কিন্তু থেকেই যায়। এতে দেখা যায় পেইনকিলার খাওয়া বাদ দিলেই ব্যথা আরও বেশি হতে পারে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে।
কোমরের সমস্যা সমাধান অনেক সময় আমাদের হাতের কাছেই থাকে। আবার চাইলে ঘরোয়া উপায়েও এ ব্যথাকে দূর করা যায়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কোমরের ব্যথা দূরে রাখবেন—
১. এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না। এতে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
২. বসা থেকে উঠে মাঝেমধ্যে ব্যায়াম করতে পারেন। এ জন্য কোমর ভাঁজ করে কিছু শরীর চর্চা করতে পারেন। তবে কখনোই মাটিতে বসে কাজ করবেন না।
৩. নরম ম্যাট্রেস বা ফোমের বিছানায় ঘুমাবেন না।
কোথাও ব্যথা হলে প্রাথমিকভাবে সেঁক দিলে অনেকটা ভালো ফল পাওয়া যায়। এ জন্য কোমরের যেখানে ব্যথা অনুভব করবেন, সেখানে গরম সেঁক দিতে পারেন। ব্যথা কিছুটা হলেও কমে যাবে। ঝামেলা এড়াতে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এর মধ্যে গরম পানি ঢেলে কোমরের যেখানে ব্যথা, সেখানে দিয়ে রাখতে পারেন।
কোমরের ব্যথায় আদা দারুণ কার্যকর। কারণ, এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। আর পটাশিয়ামের অভাবে নার্ভের সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন নিয়মিত আদা খেলে কোমরের যন্ত্রণা অনেকটা কমে যেতে পারে।
প্রতিদিন নিয়ম করে দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে কোমরের ব্যথা কমতে পারে।
মেথি বীজ ও গুঁড়া দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর ব্যথার জায়গায় মিশ্রণটি লাগালে অনেকটা উপকার মিলবে।
অ্যালোভেরার শরবত প্রতিদিন নিয়ম করে খেলে কোমরের ব্যথা কমে যেতে পারে।
ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খাদ্য প্রতিদিন নিয়ম করে খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। তাই নিয়ম করে দুধ, ঘি, চিজ, ফল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি খেতে হবে।
আমাদের কোমরে পাঁচটি হাড় আছে। এ হাড়গুলো বয়সের কারণে বা বংশগত কারণে অনেক সময় ক্ষয় হয়ে যায়, তখন তাকে লাম্বার স্পনডোলাইসিস বলা হয়।
কোমরের ব্যথা হওয়ার জন্য এটি একটি শক্তিশালী কারণ। এ সমস্যা সাধারণত ২৫-৪০ বছর বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে বেশি হয়। আমাদের দেহের মধ্যে হাড়ের যে ফাঁকা জায়গা আছে, এটি পূরণ করে ডিস্ক বা চাকতি দিয়ে। যদি কোনো কারণে এই ডিস্ক বের হয়ে যায়, তখন এটি আমাদের স্নায়ুমূলের ওপরে চাপ প্রয়োগ করে। এর ফলে আমাদের কোমরে ব্যথা হতে পারে।
আমাদের দেহের হাড়, মাংসপেশি, স্নায়ু—তিনটি উপাদানের সামঞ্জস্য নষ্ট হলে এ ব্যথা হয়; কিন্তু কী কারণে এটি হয়, তার কারণ এখনো জানা যায়নি। বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
- শিরদাঁড়ায় টিউমার ও ইনফেকশন হলে;
- মাংসপেশি শক্ত হয়ে গেলে বা মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়লে;
- শরীরের ওজন বেড়ে গেলে;
- একটানা হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে;
- কোলে ভারী কিছু বহন করলে।
সূত্র : জিনিউজ
মন্তব্য করুন