ইউরিন ইনফেকশন (প্রস্রাবের সংক্রমণ) খুব পরিচিত একটি রোগ। নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে ছোট-বড় প্রায় সবাই এ রোগে ভুগে থাকেন। অনেকেই এ রোগের লক্ষণ না জানায় সংক্রমিত হওয়ার পরেও বুঝতে পারেন না। এতে ভেতরে ভেতরে বাড়তে থাকে এ রোগ। তাই কিছু নিয়ম মেনে চললে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
মূত্রতন্ত্রের কোনো অংশে জীবাণু দ্বারা সংক্ৰমণ হলে সেটিকে ইউরিন ইনফেকশন বা প্রস্রাবের সংক্ৰমণ বলে। ডাক্তারি ভাষায় একে ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ বা ‘ইউটিআই’ বলা হয়। ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া অথবা ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াসহ বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
১. প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বা লালচে হওয়া।
২. প্রস্রাবে বাজে গন্ধ।
৩. তলপেটে বা পিঠে তীব্র ব্যথা।
৪. একটু পরপর প্রস্রাব লাগা, কিন্তু ঠিকমতো না হওয়া।
৫. প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা করা।
৬. সারাক্ষণ জ্বর জ্বর ভাব অথবা কাঁপুনি দিয়ে ঘন ঘন জ্বর হওয়া।
৭. বমি ভাব বা বমি হওয়া।
প্রস্রাব আটকে না রাখা অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখেন, যা খুবই বাজে অভ্যাস। এর ফলে ইউরিনারি ইনফেকশন হতে পারে। প্রস্রাব দীর্ঘ সময় আটকে রাখার ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখবেন না। এই অভ্যাস থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসুন। তাহলে এ রোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
প্রচুর পানি পান করা ইউরিনারি ইনফেকশনকে প্রতিরোধের সেরা উপায় হলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। এতে মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া কমানোর সঙ্গে সঙ্গে ইউরিনারি ইনফেকশনও দূর করে।
ভিটামিন সি ইউরিনারি ইনফেকশন এড়াতে নিয়মিত ভিটামিন সি গ্রহণ করতে পারেন। প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করলে শরীরে যে অম্ল উৎপন্ন হয়, তা মূত্রে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিস্তার রোধে দারুণভাবে কাজ করে।
গরম পানিতে গোসল গরম পানিতে গোসল করলে ইউরিনারি ইনফেকশনের ব্যথা কিছুটা উপশম হতে পারে।
স্বাস্থ্যবিধি পালন শরীর সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিকল্প নেই। তাই ঢিলেঢালা পোশাক পরা, সুতি কাপড়ের অন্তর্বাস ব্যবহার, নিয়মিত গোসল করা, সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি খুবই জরুরি।
১. ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যায় প্রচুর পানি পান করা প্রয়োজন। এর ফলে বেশি বেশি প্রস্রাব হবে এবং শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়া বের হয়ে যাবে।
২. এ রোগের প্রতিকারে বেকিং সোডা খেতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে সপ্তাহে একদিন সকাল বেলা পান করলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমবে।
৩. কিছু সেলেরি বীজ চিবান, এ বীজ মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এক মুঠো সেলেরি বীজ চিবিয়ে রস খেতে পারেন অথবা এক কাপ গরম পানিতে কিছু সেলেরি বীজ দিয়ে ঢেকে দিন। ৮ মিনিট পর মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে পান করুন। এটা ইউটিআই প্রতিরোধ করে।
৪. শসাতে প্রচুর পানি আছে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে একটি শসা স্লাইস করে খেতে পারেন।
৫. প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমাতে গরম সেঁক নিন। হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি নিয়ে আপনার তলপেটের ওপর রাখুন। এতে খুব দ্রুত প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও ব্যথা দূর হবে।
মন্তব্য করুন