চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই বাজারে আসতে পারে রাশিয়ার গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি ক্যানসারের টিকা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) গামালিয়ার পরিচালক আলেক্সান্দার গিন্টসবার্গ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গিন্টসবার্গ জানান, রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে টিকাটির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছরের আগস্টের শেষ নাগাদ চিকিৎসাক্ষেত্রে এই টিকা ব্যবহারের প্রস্তুতি শুরু হবে এবং সেপ্টেম্বর থেকেই এটি রোগীদের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন যুগের শুরু
গামালিয়ার তৈরি এই টিকাটি হবে বিশ্বের প্রথম ক্যানসারের টিকা, যা এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এমআরএনএ হলো এক ধরনের প্রোটিন, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্যানসারের মতো জটিল রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রশিক্ষিত করে।
গিন্টসবার্গ জানান, যেসব রোগীর ক্যানসার ধরা পড়েছে, তাদের জন্য এই টিকা কার্যকর হবে। টিকা গ্রহণের পর এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে ক্যানসার কোষ শনাক্ত এবং ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে কার্যকারিতা বেশি
গবেষণা অনুযায়ী, টিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যানসার রোগীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর। তবে মধ্যম পর্যায়ের রোগীরাও এ টিকা থেকে উপকার পাবেন। চূড়ান্ত পর্যায়ের রোগীদের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ায় ক্যানসার পরিস্থিতি
রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৪০ লাখ ক্যানসার রোগী রয়েছেন। প্রতি বছর নতুন করে প্রায় ৬ লাখ ২৫ হাজার মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হন।
গিন্টসবার্গ আরও জানান, শুধু এই টিকাই নয়, চলতি বছর রাশিয়ায় আরও কিছু নতুন ক্যানসার প্রতিরোধী ওষুধ এবং টিকা বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এই বিষয়ে গবেষণায় এগিয়ে আসছে।
গামালিয়ার সাফল্যের ইতিহাস
বিশ্বের শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো গামালিয়া ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটি এর আগে প্রথম করোনা টিকা স্পুটনিক-৫ তৈরি করে। এটি রাশিয়া এবং বিশ্বের ৫৫টিরও বেশি দেশে করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যবহার করা হয়েছে।
বিশ্বের প্রথম ক্যানসার টিকার এই সাফল্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন