খুশকি বা ড্যানড্রাফজনিত সমস্যায় ভোগেননি এমন মানুষ পাওয়া ভার। সাধারণত নভেম্বর ও ডিসেম্বরের দিকে এ সমস্যা প্রকট হয়। কারণ, এ সময়টাতে আবহাওয়া কখনো রুক্ষ, আবার কখনো আর্দ্র থাকে। ফলে এ সময়টাতে খুশকির সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়। এমনকি চুলের স্বাস্থ্যহানির জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই খুশকিই দায়ী। যাদের ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা থাকে কিংবা মাথার ত্বক অপরিষ্কার থাকলে খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে। খুশকি থেকে অতিরিক্ত চুল পড়া এবং অ্যালার্জির মতো সমস্যাও হতে পারে। তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে এর সমাধান প্রয়োজন। মেডিকেশন ছাড়া ঘরোয়া পদ্ধতিতে খুশকি দূর করার উপায়গুলো জেনে নিই।
১. দইয়ের প্যাক অনেকেই খুশকি দূর করার জন্য মাথায় দইয়ের প্যাক ব্যবহার করে থাকেন। এটি মাথার স্কাল্পে খুশকি সরানোর সঙ্গে সঙ্গে চুলের গোড়াকে শক্ত করে। রুক্ষ চুলের ব্যাকটেরিয়া নির্মূলের পাশাপাশি শক্ত চুলকে নরম ও শাইন করে দইয়ের ব্যবহার। ২. নারকেল তেল ও লেবুর মিশ্রণ নারকেল তেল আর পাতি লেবুর মিশ্রণ চুলের জন্য খুবই উপকারী। নারকেল তেল চুলের জন্য নিউট্রিশন জোগান দেয় আর পাতি লেবুর রস খুশকি সমস্যা দূর করে।
ব্যবহার : দুই চামচ পাতি লেবুর রস আর দুই চামচ নারিকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে চুলের মধ্যে ও চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করতে হবে। ম্যাসাজ করার পর এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে সমস্ত মাথা ধুয়ে নিতে হবে।
৩. নিম পাতার ব্যবহার নিম পাতা বেটে চুলের গোড়ায় রেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি মাথায় থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করার পাশাপাশি চুলকানির সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন।
৪. তেল ও আপেল সাইডার ভিনেগার তেলের সঙ্গে আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে মাথায় কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। পাঁচ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এটির মাথায় থাকা খুশকি ও ফাঙ্গাস দূর করে।
৫. লেবুর রস পুরো একটি লেবুর রস মাথায় চিপে ঢেলে দিতে হবে। অথবা এক গ্লাস পানিতে পুরো একটা লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় ঢেলে দিতে হবে। এতে চুল চকচকে ও সুন্দর হবে। ৬. আমলকী আমলকী চুলের জন্য খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে, যা চুল ও ত্বককে ভালো রাখে।
১. পর্যাপ্ত ঘুম কম বা অনিয়মিত ঘুম খুশকির অন্যতম কারণ। দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমালে মাথার খুশকি চলে যাবে।
২. ধুলোবালিতে কাজ ও বেশি ঘাম হলে ধুলোবালিতে কাজ করার পর অনেকে ভালোভাবে গোসল করেন না। সে ক্ষেত্রে খুশকি প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। তাই ধুলোবালিতে কাজ করার পর সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে গোসল করতে হবে। এ ছাড়া কাজের সময় বেশি ঘাম ঝরলে কাজ থেকে ফিরে ভালোমতো গোসল না করলেও খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. চুল ভেজা রাখা গোসলের পরে চুল ভেজা বা আধা শুকনো রাখলে মাথায় খুশকি দেখা দিতে পারে। তাই গোসলের পরপর ভালোভাবে মাথা মুছে শুকিয়ে নিতে হবে।
৪. পর্যাপ্ত পানি পান দৈনিক ২.৫-৩ লিটার পানি পান করতে হবে। কম পানি খাওয়ার ফলে অনেকের খুশকি প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তাই খুশকিমুক্ত থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।
৫. ভেজাল প্রসাধনী নকল বা ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারেও মাথায় খুশকি দেখা দিতে পারে।
ওপরের টিপসগুলো যথার্থ ব্যবহারে মেডিকেশন ছাড়াই চুলের খুশকি দূর করা সম্ভব। এর পরও খুশকি সমস্যা দূর না হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
মন্তব্য করুন