বয়স বাড়ার সাথে সাথে বেশিরভাগ বয়স্ক ব্যক্তি একাধিক দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন। যদিও মানুষের আয়ুষ্কাল বা জীবনকাল বেড়েছে, তবুও অনেকেই এই বাড়তি সময় সুস্থভাবে কাটাতে পারছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘায়ু পাওয়ার চেয়ে এখন বেশি জরুরি সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করা।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে, মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে আধুনিক চিকিৎসা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার কারণে। আগের তুলনায় এখন মানুষ অনেক বেশি দিন বাঁচছেন, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই দীর্ঘ জীবন কেমনভাবে কাটাচ্ছেন?
অনেকেই দীর্ঘ জীবন কাটালেও তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে না, যার ফলে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং স্বাস্থ্যসেবার খরচও বাড়ে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এখন মানুষের আয়ুষ্কাল (লাইফস্প্যান) ও সুস্থ জীবনকালের (হেলথস্প্যান) মধ্যে অনেক ফারাক তৈরি হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী এই ব্যবধান বর্তমানে প্রায় ৯.৬ বছর। অর্থাৎ, মানুষের জীবনের শেষ দশক প্রায়ই দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা শারীরিক সমস্যায় কাটে। খবর দ্য হিন্দুস্তান টাইমস।
যুক্তরাষ্ট্রে এ ব্যবধান আরও উদ্বেগজনক। সেখানে জীবনকাল এবং সুস্থ জীবনকালের মধ্যে ব্যবধান ১২.৪ বছর। অর্থাৎ, সেখানে মানুষ তাদের শেষ বয়সে অনেক বছর ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। গবেষকরা এটিকে 'স্বর্ণযুগের' এক মর্মান্তিক বাস্তবতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যেখানে দীর্ঘ জীবনের বাড়তি সময় কষ্টের মধ্যে কাটছে।
এছাড়া, নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি বাঁচে, কিন্তু তাদের অতিরিক্ত সময়ের বেশিরভাগই অসুস্থতায় কাটে। বিশ্বব্যাপী এই ব্যবধান নারীদের জন্য ২.৪ বছর বেশি এবং জার্মানিতে এটি ৩.৬ বছর।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, মাদকাসক্তি, আর্থ্রাইটিস (হাড়ের ক্ষয়), পিঠের ব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে এই ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। নারীরা এসব সমস্যায় বেশি ভুগছেন, যা তাদের দীর্ঘ জীবনকাল এবং সুস্থ জীবনকালকে আরও বিভক্ত করে ফেলছে।
গবেষকরা বলছেন, যেসব দেশে গড় আয়ু বেশি, সেসব দেশেই আয়ুষ্কাল এবং সুস্থ জীবনকালের মধ্যে ব্যবধান আরও বড় হচ্ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে জীবনকাল বাড়লেও, পরবর্তী জীবনের স্বাস্থ্য মান উন্নত হয়নি। তাই সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করার দিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
মন্তব্য করুন