দেশে একসময় শিশুদের রাতকানা (অন্ধত্ব) রোগের প্রকোপ থাকলেও বর্তমানে তা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শারীরিক নানা জটিলতাও দূর হয়।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে (নিপসম) ‘জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যখন এই কর্মসূচি শুরু করেন, তখন চার শতাংশের বেশি শিশু ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত অন্ধত্বসহ নানা সমস্যায় ভুগত। সফল টিকা ব্যবস্থাপনার কল্যাণে দেশে অন্ধত্ব ৪ শতাংশ থেকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ সারা দেশে দুই কোটি ৩০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে। এজন্য আমাদের দুই লাখ ৪০ হাজার ভলানটিয়ার কাজ করছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও কাজ করছেন। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ। এসব কারণে আমাদের শিশু-মাতৃমৃত্যু কমেছে।
মন্ত্রী বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেলে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তাদের দেহের ইমিউনিটি বৃদ্ধি পায়। এমনকি নানা সংক্রমণ ব্যাধি থেকে রক্ষা পায়। এ জন্যই প্রতি বছর এত বড় একটা কর্মযজ্ঞ করে থাকি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সারা দেশে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী দুই কোটি ৩০ লাখের বেশি শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের ক্যাপুসল খাওয়ানো হবে। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শিশুদের এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়াতে শিশুদের ভরা পেটে কেন্দ্রে আনতে হবে। ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের এসব ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। পাঁচ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুদের খাওয়ানো যাবে না। দেশজুড়ে ১ লাখ ২০ হাজার কেন্দ্রে ২ লাখ ৪০ হাজার স্বাস্থ্যসেবাকর্মী এবং ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ভিটামিন শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজ করবেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু এনডিসি, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবীরসহ অন্যান্য বক্তাগণ।
মন্তব্য করুন