প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদনক্রমে ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল মূল প্রতিপাদ্য ‘Quality Education for All’। এই মূলমন্ত্র আমরা এখন পর্যন্ত ধরে রাখতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস। শুরুতে তিনটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), ডিপার্টমেন্ট অব ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই), ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) এবং ডিপার্টমেন্ট অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রয়েছে। স্কুল অব বিজনেস অ্যাডিমিনিস্ট্রেশনের অধীনে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ), মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) বিভাগ রয়েছে। এছাড়া স্কুল অব সোশ্যাল সাইন্সের অধীরে রয়েছে বিএসএস অ্যান্ড এমএসএস ইন ইকোনোমিক্স, স্কুল অব লিবারাল আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসি অনুষদের অধীনে বিএ ইন ইংলিশ এবং এমএ ইন এএলটি ও স্কুল অব লর অধীনে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
বর্তমানে ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৩০০০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সংখ্যার অনুপাত ১:১৫, যা কিনা শিক্ষার পরিবেশের জন্য আদর্শ। বর্তমানে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতে দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে প্রস্তুত করার জন্য তথ্য শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুনাগরিক হিসেবে আমাদের ছাত্র/ছাত্রীদের গড়ে তোলার জন্য আমরা চালু করেছি অনেকগুলো ক্লাব, যারা তাদের কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছে। ক্লাবগুলো হচ্ছে সোশ্যাল সার্ভিস ক্লাব, বিজবক্স ( বিজ্ঞান ক্লাব), ইসিই ক্লাব, সিই ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস ক্লাব, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, প্রোগ্রামিং ক্লাব, এআই ক্লাব, ডিবেট ক্লাব, ব্লকচেইন ক্লাব, রোবোটিক্স ক্লাব ইত্যাদি। এছাড়া ডিপার্টমেন্ট অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স প্রতি সপ্তাহে সাম্প্রতিক বিষয় যেমন চ্যাট জিপিটি, সিভি রাইটিং, অ্যাডভান্স এক্সেল, কনটেন্ট রাইটিংয়ে চ্যাট জিপিটির ব্যবহার, সাইবার সিকিউরিটি, প্রোগ্রামিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইত্যাদির ওপর কর্মশালা করে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সমাজের অসচ্ছল পরিবারের কথা মাথায় রেখে কোর্স ফি, অ্যাডমিশন ফিসহ অন্যান্য ফি প্রায় সমস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক কম রাখা হয়েছে। এছাড়াও আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র ও মেধাবী, উপজাতি, মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বহু ধরনের স্কলারশিপ, ওয়েভার চালু আছে। সেমিস্টারের শুরুতে অ্যাডমিশন ফেয়ারে ভর্তিতে বিশেষ মূল্য ছাড়ের ব্যবস্থা আছে।
যেমন ব্যাচেল প্রোগ্রামের জন্য এসএসসি ও এইচএসসিতে দুটো মিলিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীরা শতভাগ স্কলারশিপ, এ প্লাস প্রাপ্তরা ৮০ শতাংশ স্কলারশিপ, ৯ থেকে ৯.৯৯ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ৪৫ শতাংশ স্কলারশিপ, ৮ থেকে ৮.৯৯ প্রাপ্তরা ৩৫ শতাংশ স্কলারশিপ, ৭.৫ থেকে ৭.৯৯ প্রাপ্তরা ৩০ শতাংশ স্কলারশিপ, ৭ থেকে ৭.৪৯ প্রাপ্তরা ২০ শতাংশ স্কলারশিপ, ৬ থেকে ৬.৯৯ প্রাপ্তরা ১০ শতাংশ স্কলারশিপ পাবেন।
আমাদের আগামী প্রজন্ম এবং রাষ্ট্র উভয়েরই দরকার টেকসই ভবিষ্যৎ। বিশ্বায়ন এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আমাদের প্রতিযোগিতায় নামতে হবে সারা বিশ্বের রাষ্ট্রের সঙ্গে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিকে থাকতে হলে দৃঢ় রাষ্ট্রীয় কাঠামো- যেমন দরকার তেমনি দরকার জনশক্তিকে গণসম্পদে পরিণত করা। তার জন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান, সঠিক শিক্ষা কারিকুলাম , কারিগরি দক্ষতা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্র, সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা।
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন শেষে ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন কোম্পানিতে ভালো পজিশনে কাজ করছে। এমনকি দেশে কাজ করার পাশাপাশি বিদেশেও কাজের সুযোগ পাচ্ছে। যেমন জার্মানিতে কাজি রাহিম উল্লাহ রাজি বিবিএ শেষ করে অ্যামাজনে করছেন, দেওয়ান জামিল বিবিএ করে ওয়ালটনের উপপরিচালক হিসেবে কাজ করছেন এবং জাপানে শাহরিয়ার কবির সিএ থেকে পড়াশুনা করে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন।
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির আইটি বিশেষজ্ঞরা আমাদের আইটি বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টের কাজ করছে। তা ছাড়া মেন্টরশিপ ও ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে তারা ছাত্র/ছাত্রীদের সহযোগিতা করছেন। এসব প্রোগ্রাম ছাত্র/ছাত্রীদের তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি অভিজ্ঞতা বাড়াতে কর্মজীবনে বিরাট ভূমিকা রাখবে।
৪র্থ শিল্প বিপ্লব এর কথা মাথায় রেখে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফ্যকশন হোল্ডিংস’ এর মধ্যে সম্প্রতি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই এমওইউ স্বাক্ষরের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ছাত্র/ছাত্রীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং স্মার্ট সিটি পরিকল্পনায় সংযুক্ত করা এবং সর্বশেষ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করা। এছাড়াও প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি কয়েকটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা রয়েছে। যেমন :
প্রসেডিন্সে ইউনিভার্সিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব,টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও সাংবাদিকতা বিভাগ চালু করা হবে। এসব ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সহযোগিতা এবং সমর্থন পাবে বলে আমি আশা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, আমি অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে উল্লেখ করছি উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববদ্যিালয়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমার যে কোন সিদ্ধান্ত, পরামর্শ ও মতামত বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর সম্মানিত সদস্যগণ সমর্থন ও সহযোগিতা করছেন। যার ফলে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দের সঙ্গে আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারছি। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি ও উন্নয়নের কাজে সকল সহকর্মী আন্তরিক সহযোগিতা করছেন। এ ধরনের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একদিন উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বহুদূর নিয়ে যাবে। সেজন্য প্রেসিডেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মন্তব্য করুন