ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি

ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার। ছবি : সংগৃহীত
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার। ছবি : সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে ২৮তম জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ (কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ)-এর ২৮তম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ দিনব্যাপী এ সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এর প্রথম সপ্তাহের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো এ পর্যন্ত জলবায়ু ফান্ডের ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থায়ন পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছে, যা জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এমনই ঘোষণা দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের পরিবেশ মন্ত্রী এবং জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এর প্রেসিডেন্ট ড. সুলতান আল জাবের। এই ঘোষণা প্রথমবারের মতো খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার রূপান্তর, নবায়নযোগ্য শক্তি ও শক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ভারী শিল্প থেকে কার্বনমুক্তকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। দক্ষিণের দেশগুলোতে জলবায়ু সহায়তা বৃদ্ধির জন্য এবং ব্যক্তিগত অর্থায়নের গতি বৃদ্ধির জন্য আলটেরা নামক ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি IMF এর SDRs তহবিলে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পানির সমস্যা দূরীকরণের জন্য আরও ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এর ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য বাৎসরিক ৯ বিলিয়ন মার্কিং ডলার সহায়তা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়াও গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (GCF) সমৃদ্ধ করতে আরও ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ যুক্ত করার ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে যুক্ত হয়েছে ২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, খাদ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আরবান ক্লাইমেট একশনের জন্য ৪৬৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ত্রাণ-পুনঃবাসন জন্য ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারের গতি বাড়ানোর জন্য ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, মিথেন নির্গমন হ্রাসের জন্য ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য ৫৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছে। জলবায়ু জরুরি অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ধনী দেশগুলো এখন পর্যন্ত লস এবং ড্যামেজ তহবিলে মোট ৭২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রতিবছর উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে যে পরিমান অপূরণীয় অর্থনৈতিক এবং অনর্থনৈতিক ক্ষতি হয় তার মাত্র ০.২% বা এরও কম। জলবায়ু ন্যায়বিচার নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের মতে, লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড অবশ্যই অনুদান হতে হবে এটি কোনো ঋণ নয়। কারণ উন্নত দেশগুলোর সেচ্চাচারী দূষণের কারণে অনুন্নত দেশগুলোর ভুক্তভোগী হচ্ছে। তবে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডের অর্থের প্রকৃতি ও সময় অস্পষ্ট থাকে বলে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর যাচ্ছে না।

কপ-২৮ এর শেষ সপ্তাহের দিনগুলোতে বিশ্বব্যাপী জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন কমানোর জন্য একটি খসড়া চুক্তি তৈরি করা হয় যাকে বিশেষজ্ঞগণ ‘অতি অপর্যাপ্ত’ এবং ‘অসংলগ্ন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের ধারণা এটি কখনই বিশ্বকে বিপজ্জনক জলবায়ু পরিবর্তনের থেকে রক্ষা করতে পারবে না। ১০ দিনের আলোচনার পরে শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্বে যে খসড়া চুক্তিপত্রটি পেশ করা হয়েছিল তা বেশিরভাগ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তবে অন্যরা জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন হ্রাস করার বিষয়টি উল্লেখসহ খসড়াটির উপাদানগুলোকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিছু দেশ হতাশা প্রকাশ করছে কারণ খসড়াতে বলা হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানির সম্পূর্ণ ফেজ-আউটের প্রয়োজন নেই। কপ-২৮ প্রেসিডেন্সি সোমবার সন্ধ্যায় একটি খসড়া পাঠ্য প্রকাশ করেছে, যেখানে ‘জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং উৎপাদন উভয়ই হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে এবং বিজ্ঞানের সাথে তাল মিলিয়ে একটি ন্যায্য, সুশৃঙ্খল এবং ন্যায়সঙ্গত উপায়ে ২০৫০ সালের আগেই বা তার কাছাকাছি সময়ে নেট শূন্য অর্জন করা যায়।’ খসড়াটি জীবাশ্ম জ্বালানির ‘ফেজ-আউট’ বা ‘ফেজ-ডাউন’ করার জন্য অত্যন্ত বিতর্কিত আহ্বান এড়িয়ে যাচ্ছে, যা দুবাইতে ১৯০টিরও বেশি দেশের বৈঠকের মধ্যে গভীর মতবিরোধের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং জাপানসহ দেশগুলোর একটি দল বলেছে যে তারা ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর জন্য ‘মৃত্যুর সার্টিফিকেট’ এর ‘সহস্বাক্ষরকারী’ হবে না এবং এটি মোকাবিলা করার জন্য কপ-২৮ শীর্ষ সম্মেলনে একটি শক্তিশালী চুক্তির দাবি করেছে। জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করা কখনই সম্ভব হবে না। তাই সুশীল সমাজগোষ্ঠী এবং বিজ্ঞানীরা জলবায়ু চুক্তির দ্বিতীয় খসড়া পত্রে জীবাশ্ম জ্বালানিকে ‘ফেজ-আউট’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, তাপপ্রবাহসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে গেছে। এসব দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ও নেতৃত্বের প্রশংসায় তাকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার’ পুরস্কার দেওয়া হয়। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ১ ডিসেম্বর দুবাইতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৮) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি রাষ্ট্রদূত ডেনিস ফ্রান্সিস এবং আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে একটি নিরাপদ ও উন্নত স্থান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) কপ-২৮ এর রেসিলিয়েন্স হাবে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন ও সহনশীলতা বিনির্মাণে বাংলাদেশের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ইনোভেশন ইন ডেভেলপিং ফাইন্যান্স ক্যাটাগরিতে ‘গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ)’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ। লোকাল লিড অ্যাডাপটেশন (এলএলএ) ক্যাটাগরিতে এ চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের বাস্তবায়ন করা স্থানীয় সরকার ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্প যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), সুইডেন, ডেনমার্ক, জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিল (ইউএনসিডিএফ) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশের ৯টি প্রধান জলবায়ু ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় উপকৃত হয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য ৪ লাখেরও বেশি পরিবারের ক্ষমতায়ন করেছে। জিসিএ অ্যাওয়ার্ডস বিজয়ীদের জন্য কেবল তাদের অর্জনকেই স্বীকৃতি দেয় না বরং স্থানীয় পর্যায়ের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকেও বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। এই ধরনের পুরস্কারগুলো টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে জলবায়ুকে সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে অনন্য ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, অ্যাডাপ্টেশন ফান্ড, স্পেশাল ক্লাইমেট চেঞ্জ ফান্ড ইত্যাদি বেশকিছু ফান্ডের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। এসব ফান্ড পেলে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উদ্বাস্তু সমস্যাটিকে রোধ করতে বিভিন্ন গঠনমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে এবং বিভিন্ন মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন নিশ্চিত ও ত্বরান্বিত করতে পারবে। যে সমস্ত মানুষ তাদের আবাসস্থল ছেড়ে অনত্র যেতে বাধ্য হচ্ছে তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিত এবং তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূর্ণ করতে পারবে। . লেখক : অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বিভাগীয় প্রধান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। যুগ্ম-সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। চেয়ারম্যান, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১০

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১১

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১২

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৩

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৪

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৫

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৬

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

১৭

বিসিবির দুর্নীতির তদন্ত দাবি সাবেকদের

১৮

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

১৯

জেল খেটেছি তবু শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যাইনি : সাবেক এমপি হাবিব

২০
X