ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৭ পিএম
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কপ-২৮ এর সফলতা নির্ভর করছে জীবাশ্ম জ্বালানিকে ফেজ-আউট ঘোষণার ওপর

কপ-২৮ এর সফলতা নির্ভর করছে জীবাশ্ম জ্বালানিকে ফেজ-আউট ঘোষণার ওপর

জীবাশ্ম জ্বালানিকে ‘ফেজ-আউট’ বা ‘ফেজ-ডাউন’ ঘোষণাটি কপ-২৮ চূড়ান্ত চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে কিনা তার ওপর নির্ভর করছে ২০২৩ সালের জলবায়ু সম্মেলনের সফলতা। বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন যে হারে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুদূষণ বাড়ছে এবং জলবায়ু সংকট তীব্রতর হচ্ছে; তা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে শক্তিশালী উপায় হলো জীবাশ্ম জ্বালানিকে ‘ফেজ-আউট’ বিষয়ে বিশ্বনেতাদের সম্মত হওয়া। এটি আর গোপন নয় যে, জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার মাধ্যমেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর নিচে রাখা সম্ভব। তবে, প্রাধান্য বিস্তারকারী জীবাশ্ম জ্বালানির পর্যায়ক্রমিক বন্ধের বিষয়টিকে একটি সাধারণ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া বলে মনে হলেও বাস্তবে এটি একটি জটিল এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছেন কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিগণ।

জীবাশ্ম জ্বালানির পর্যায়ক্রমিক বন্ধের বিষয়টি কপ-২৮ এ সবচেয়ে বড় ফ্ল্যাশপয়েন্ট। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে CO2 নির্গমনের পরিমাণ ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হতে পারে। বৈশ্বিক কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের অন্যতম উৎস রুটিন ফ্লেয়ারিং। তেল কোম্পানিগুলো অপরিশোধিত (খনিজ) তেল উত্তোলনের সময় পরিবেশে প্রচুর পরিমাণে অপ্রয়োজনীয় মিথেন গ্যাস ও অন্যান্য গ্যাস নির্গত হয়। এই অপ্রয়োজনীয় গ্যাসগুলোকে উন্মুক্ত চিমনির মধ্যে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয় যা রুটিন ফ্লেয়ারিং নামে পরিচিত। তেল উত্তোলনের সময় মিথেন নিঃসরণ হ্রাসের জন্য রুটিন ফ্লেয়ারিংয়ের ফলে প্রচুর কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে দ্রুত পরিচালিত করার পেছনে কপ-২৮ এর প্রেসিডেন্সির মূল উদ্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোকে কার্বন নির্গমন পরিমাণ কমানোর জন্য উৎসাহিত করা। এখন পর্যন্ত ৫২টি কোম্পানি ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো অপারেশনের প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে রুটিন ফ্লেয়ারিং শেষ করবে আশ্বাস দিয়েছে।

খ্রিস্টান এইডের ডিসেম্বর মাসের প্রেস রিলিজ থেকে জানা যায়, যদি জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ না করা হয় এবং বর্তমানে যে হারে গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করছে, এর ফলে ২১০০ সালের মধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। বিশ্বব্যাপী বর্ধিত তাপমাত্রা যদি শিল্পবিপ্লবের পূর্বের অবস্থা থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয় তবে উপসাগরীয় দেশগুলো এই শতাব্দীর শেষের দিকে জিডিপিতে গড়ে ৬৯ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। এই উপসাগরীয় অঞ্চলেই জীবাশ্ম জ্বালানির মজুত ও উৎপাদন বেশি, তাই অঞ্চলগুলোকেই জলবায়ু সংকটের ব্যাপারে বেশি সোচ্চার হওয়া উচিত।

(অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, বিভাগীয় প্রধান, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ, ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং চেয়ারম্যান, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। ই-মেইল : [email protected]

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পুরোনো শত্রু মিত্র হওয়ার অনেক উদাহরণ আছে : উপ-প্রেস সচিব

গাজীপুরে দুই শিশুকে হত্যা, পুলিশ হেফাজতে বাবা-মা

‘নতুন করে আর কোনো সরকারকে স্বৈরাচার হতে দেওয়া হবে না’

অনার্স পড়ুয়া ভাগ্নের হাত ধরে মামি উধাও

পররাষ্ট্রনীতিতে পারদর্শী হয়ে উঠছে বাংলাদেশ : ভারতীয় বিশেষজ্ঞ

লালবাগে রহমতুল্লাহ স্কুল মিলনায়তনে জিয়াউর রহমানের নাম পুনঃস্থাপন

পূর্ণিমায় মজেছেন নেটিজেনরা

বরিশাল সিটি করপোরেশনে ফল বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের মামলা

২১ শতকের ‘চেঙ্গিস খান’ হতে চান ইলন মাস্ক

ড. ইউনূসকে ৫ বছর ক্ষমতায় রাখার দাবিতে ঢাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

১০

সমন্বয়ক পরিচয়ে ২ লাখ টাকা দাবি, ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪ 

১১

‘মব’ করে পুকুরের মাছ লুট, মামলার পর বাদীর বাড়িতে হামলা

১২

বিশ্বমঞ্চে পৌঁছেছে গল্প, ফাতিমা রয়ে গেছেন গাজায় মাটির নিচে

১৩

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ

১৪

ইসরায়েলে ঝাঁকে ঝাঁকে নামছে মার্কিন সামরিক বিমান

১৫

জাতীয় জাদুঘরে শুরু তিন দিনের দুর্লভ মুদ্রা প্রদর্শনী

১৬

চাঁদা না পেয়ে প্রকাশ্যে গুলি, মারধরে আহত ১

১৭

আ.লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদসহ দুজন রিমান্ডে

১৮

আফিল লেয়ার ফার্মে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

১৯

শারীরিক নির্যাতনের শিকার শিশুর খোঁজ নিলেন তারেক রহমান

২০
X