দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় আর্থ রিমোট সেনসিং প্রযুক্তির ব্যবহার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী একটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপ্তি হয়েছে রোববার (১৩ এপ্রিল)।
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছিল। দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ভূগোলবিদ, জলবায়ু ও পরিবেশ বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা অংশ নিয়েছেন।
‘এনহ্যান্সিং ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স থ্রু আর্থ অবজারভেশন ইন দ্য সাউথ এশিয়ান রিজিয়ন’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করেছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং সেন্টার ফর ক্লাইমেট সোসাইটি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিসিএসই), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর) এবং চীনের অ্যারোস্পেস ইনফরমেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআইআরসিএএস)। এই উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছিল এশিয়া ওশেনিয়া অঞ্চলের জন্য গঠিত গ্রুপ অব আর্থ অবজারভেশন (এওজিইও), চায়না সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এক্সচেঞ্জ সেন্টার (সিএসটিইসি) এবং এএজিইওর অধীনে রিজিওনাল ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরসিসিডি)।
রোববার এই দুই দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন।
সমাপনী বক্তৃতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ক্লাইমেট সোসাইটি অ্যান্ড এনভায়রোনমেন্ট’-এর পরিচালক ড. মো. আব্দুল মালেক বলেন, এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া তরুণ গবেষকরা পৃথিবী পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি ও জিও-ইনফরমেশন সিস্টেম বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, যা ভবিষ্যতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে কার্যকর অবদান রাখবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন বলেন, এই ধরনের আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি দেশের তরুণ গবেষকদের বৈশ্বিক জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিতি করে তুলেছে, যা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের নীতি নির্ধারণেও প্রভাব ফেলবে।
এ ছাড়া ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, আমাদের বৈজ্ঞানিক দক্ষতা, প্রযুক্তির ব্যবহার ও নীতি নির্ধারণের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করতে হবে। এই কর্মশালা সেই যৌথ প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, জলবায়ু অভিযোজন কেবল একটি বৈজ্ঞানিক বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক অগ্রাধিকার। তরুণ গবেষকদের প্রযুক্তিগত ও নীতিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে আমরা এই অভিযোজন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারি।
এ ছাড়া সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আমানত উল্লাহ খান, চীনের অধ্যাপক জিয়াং ঝউ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সি ত্রি আর এর সহকারী পরিচালক মিস রওফা খানম। দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ প্রদান করে সমাপনী নৈশভোজের মধ্য দিয়ে কর্মশালা সমাপ্ত করা হয়।
মন্তব্য করুন