বিশ্বখ্যাত পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি জলবায়ু সম্মেলনকে পরিবেশবান্ধবের ভান করে দেওয়া ধোঁকা ও পরিবেশবান্ধবতার মুখোশ বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বাকুতে যাচ্ছি না।’ তার এই সিদ্ধান্তকে দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গাফিলতি এবং পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের অভাবের প্রতি প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করার কারণগুলো নিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেন।
নিবন্ধে থুনবার্গ লিখেছেন, আজারবাইজান বাস্তবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আগ্রহী নয়। এ ছাড়াও দেশটি জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, যা প্যারিস চুক্তির ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সীমারেখার সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এই দেশটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি সোকারের মাধ্যমে তেল ও গ্যাস রপ্তানি করে থাকে, যা তাদের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯০%।
নিবন্ধে তিনি বলেন, এই ধরনের জলবায়ু সম্মেলনগুলো ‘গ্রিনওয়াশিং’ করছে। যেখানে পরিবেশবান্ধবতার নামে সত্যিকার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না; বরং এটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং পরিবেশের ক্ষতিকে বৈধ করার সুযোগ দেয়।
আজারবাইজানকে ‘দমনমূলক রাষ্ট্র’ হিসেবে উল্লেখ করে থুনবার্গ বলেন, দেশটি নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের আর্মেনীয় জনগণের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে আছে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু সংকট, যুদ্ধ, দারিদ্র্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। ‘যখন আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার কথা বলি, মানবাধিকারও তার একটি অংশ হওয়া উচিত। মানবাধিকার ছাড়া প্রকৃত জলবায়ু ন্যায়বিচার সম্ভব নয়।’
থুনবার্গ বলেন, আজারবাইজানের স্বৈরশাসক গ্রিন এনার্জি জোন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে আর্মেনীয় জনগণের বিরুদ্ধে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করছে।
এদিকে বিশ্বজুড়ে পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মীরা তার এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং আজারবাইজানের মতো দেশগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। থুনবার্গের এই প্রতিবাদ তার জলবায়ু আন্দোলনের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি এবং মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষার প্রতি গুরুত্বের প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন