জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মায়েদের সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (০৬ অক্টোবর) সকালে মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে ইউএন উইমেনের অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)-এর ‘ক্ষমতায়ন : জলবায়ুসহিষ্ণু সমাজের জন্য নারী (ফেজ ২)’ প্রকল্প আয়োজিত ‘অ্যানুয়াল কমিউনিটি অব প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজওয়ানা বলেন, রাষ্ট্রীয় দলিলগুলোর একদম শেষে জেন্ডার নিয়ে একটা চ্যাপ্টার থাকে। কারণ এটা বলতে হয় দেখে বলে, মনস্তত্ত্বে থাকে না। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ও দুর্দশা মোকাবিলা করতে হয় মায়েদের অর্থাৎ নারীদের।
তিনি আরও বলেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে টাকা দেওয়া উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর ঐতিহাসিক দায়। কিন্তু তারা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যে পরিমাণ টাকা দেওয়ার কথা তা দিচ্ছে না। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলোকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং জাতীয় পর্যায়ের মানুষকে এগুলো সমাধানের কথা ভাবতে অনেক বছর ধরে শেখানো হয়নি। আমরা সঠিক সময়ে ছোট ছোট উদ্যোগ নেই না, পরে বড় সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম হই না।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের দায় বাংলাদেশের একেবারেই কম কিন্তু ভুগতে হয় অনেক বেশি। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় অধিক মাত্রায় কার্বন নিঃসরণকারী দেশের ওপরই। তবে জেন্ডারের ওপর এর প্রভাব মোকাবিলা আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। ইউএন উইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলী সিং বলেন, আজকে একটি চমৎকার দিন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নারী নেত্রীরা এখানে এক হয়েছেন, তারা উপদেষ্টার সামনে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সমাধানগুলো তুলে ধরছেন। বাংলাদেশ অনেক আগেই দেখিয়ে দিয়েছে যে, তৃণমূলের নারী নেতৃত্বের মাধ্যমেই রূপান্তরশীল অভিযোজন হতে পারে।
এই আয়োজনে নারী নেতৃত্বাধীন ৯৭টি সংগঠন নিয়ে ‘উইমেন্স ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়। পাঁচজন নারী উদ্যোক্তাকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা পদক, ২০২৪’ তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা। পদকপ্রাপ্তরা হলেন- কুড়িগ্রামের রোশনা খাতুন, কক্সবাজারের রওশন আক্তার, জামালপুরের সুরতি বেগম, রাহিমা খাতুন ও শেফালি খাতুন।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, আজকে আমরা তৃণমূল পর্যায়ের একসঙ্গে এতজন নারী নেত্রীকে পেয়েছি, এটা যেমন আনন্দের, তেমনই প্রধান অতিথি হিসেবে একজন জলবায়ু পরিবর্তনের যোদ্ধা, নারী অ্যাক্টিভিস্টকে পাওয়াও অত্যন্ত আনন্দের। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, আমাদের দেশের নারীরাই পারবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সামাজিক সমস্যাগুলো নিরসন করতে।
মন্তব্য করুন