দেশের সংগীত অঙ্গনের উজ্জ্বল নাম কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। দেশ ও দেশের বাইরে নানা সময় গান গেয়ে হয়েছেন প্রশংসিত, পেয়েছেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। গান করেছেন দেশের কিংবদন্তি শিল্পীদের পাশাপাশি বিদেশি শিল্পীদের সঙ্গে। এ সুবাধে তার সুযোগ হয়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্টুডিওতে কণ্ঠ দেওয়ার। বর্তমানে এই শিল্পী ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন।
সেখানেই তিনি নিজের নতুন গানের রেকর্ডিং করছেন ভারতের কিংবন্দতি সংগীত পরিচালক, প্রযোজক এ আর রাহমানের স্টুডিও কে এমে। যার অনুভূতি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে প্রকাশ করে জানালেন মুগ্ধতার গল্প।
এ আর রহমানের কে এম স্টুডিওতে কণ্ঠ দেওয়ার সময়কার বেশকিছু ছবি শেয়ার করে আসিফ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মুম্বাই এসেছি কিছু রেকর্ডিংয়ের কাজে। গতকাল দুটো গানের ভয়েস দিলাম শ্রদ্ধেয় এ আর রাহমান স্যারের কে এম স্টুডিওতে। কমপক্ষে ১৫ হাজার স্কয়ার ফিটের সুবিশাল স্টুডিও। ভেতরে ঢুকেই মনটা ভালো হয়ে গেল, কী চমৎকার পরিবেশ! যারা ওনার কাছে মিউজিক ক্লাস করেন, তাদের জন্য ছাদে শেড দেওয়া সুন্দর খোলামেলা স্কুল। তার ব্যক্তিগত স্টুডিওতে গাওয়ার অনুমতি পেয়েছি, এটা পরম সৌভাগ্য আমার জন্য। ভয়েস রুমের টেম্পারেচার কেমন হওয়া উচিত সেটার অভিজ্ঞতাও পেলাম।’
গান গাইতে যেয়ে বেশকিছু বিষয়ে মুগ্ধ হন আসিফ। যার মধ্যে একটি শিল্পীদের নিরাপত্তা। এ বিষয়ে শিল্পী লিখেন, ‘এখানে শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের পেশাগত নিরাপত্তার চমৎকার সুরক্ষাব্যূহ তৈরি করে রাখা হয়েছে। আমাদের দেশ এসবের ধারেকাছেও নেই।’
এরপর আমাদের দেশের শিল্পীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি আরও আরও লেখেন, ‘সমিতি আর নির্বাচনী কাবাডি খেলা নিয়ে ব্যস্ত সবাই। আস্তে আস্তে ক্ষয়ে গেছে সব প্রতিষ্ঠান। আমারও খুব একটা কিছু করার সক্ষমতা নেই। বিভক্তি বিভাজনের করাল গ্রাসে কোমায় চলে গেছে ইন্ডাস্ট্রি। সংগীতকে ভালোবেসে ফেলেছি, তাই টিকে থাকার সংগ্রামে আছি। বয়সও বেড়েছে, হইচই করতে আর ভালো লাগে না। শৌখিন এবং মৌসুমি প্রযোজকদের সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি, মান নিয়ন্ত্রণ করতেই হচ্ছে।’
সবশেষ আসিফ দেশের রেকর্ডিং স্টুডিওর বর্তমান অবস্থা জানিয়ে নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করে লিখেন, ‘একসময়ের পেশাদার সব রেকর্ডিং স্টুডিও বাংলাদেশে এখন বন্ধ। যদিও নতুন রেকর্ডিং স্টুডিও তৈরি হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে কিছুই না। বেশির ভাগ স্টুডিও এখন ঘরকেন্দ্রিক, তা-ই উঠে এসেছে আসিফের কথায়। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে পেশাদার রেকর্ডিং স্টুডিওগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে তৈরি হয়েছে সুউচ্চ বিল্ডিং। বাসাবাড়িতে কিংবা ছোট খুপরির মতো সব স্টুডিও বানিয়ে মাটি কামড়ে মিউজিক করছে মিউজিশিয়ানরা। যেখানে ইন্ডাস্ট্রি আরও বিশাল হওয়ার কথা, সেখানে সংকুচিত হয়ে এসেছে আমাদের পৃথিবী।’
মন্তব্য করুন