অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা আইয়ুব বাচ্চু। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ভক্ত-অনুরাগীকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান ব্যান্ড সংগীতের এ উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে পথচলা শুরু তার। এরপর ১০ বছর সোলস ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। নব্বইয়ের দশকে যাত্রা শুরু হয় ব্যান্ড দল ‘এলআরবি’র।
১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল সোলস ছেড়ে দলটি গড়ে তুলেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। শুরুতে ব্যান্ডটির নাম রাখা হয়েছিল ‘লিটল রিভার ব্যান্ড (এলআরবি)। পরে এ নাম বদলে রাখা হয় ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড’ (এলআরবি)। আইয়ুব বাচ্চু মৃত্যুর আগে ২৫ বছর কাটিয়েছেন নিজ হাতে গড়া এ ব্যান্ডের সঙ্গে।
‘সেই তুমি’, ‘কষ্ট’, ‘নীল বেদনা’, ‘আসলে কেউ সুখী নয়’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘রুপালি গিটার ফেলে’, ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ফেরারি মন’, ‘মেয়ে’, ‘সেই তারা ভরা রাতে’সহ আরও যেসব গানে মৃত্যুর আগে ও পরে অনুরাগীদের মাতিয়ে রেখেছেন সংগীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু—সেই গানগুলোর প্রসার ও সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গানগুলো সংরক্ষণে আইয়ুব বাচ্চুর স্টুডিও ‘এবি কিচেন’ ও ‘এশিয়াটিক ইএক্সপি’র মধ্যে স্মৃতি জাদুঘর তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। শুধু গান নয়—গানের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হবে বাচ্চুর ব্যবহৃত গিটার এবং বাদ্যযন্ত্রসহ অনান্য সামগ্রীও।
গত মঙ্গলবার এশিয়াটিক কার্যালয়ে চুক্তি সই করেন এশিয়াটিক ইএক্সপির গ্রুপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরেশ যাকের, কো-চেয়ারপারসন সারা যাকের এবং এবি কিচেনের প্রধান নির্বাহী ফেরদৌস আইয়ুব চন্দনা। এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি গ্রুপের কো-চেয়ারপারসন সারা যাকেরও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এ চুক্তির মাধ্যমে এশিয়াটিক ইএক্সপিকে প্রয়াত কিংবদন্তি শিল্পী এবং সংগীত পরিচালক আইয়ুব বাচ্চুর সৃষ্টি করা গানগুলোর প্রচার এবং প্রসারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন শিল্পী দিয়ে নতুনভাবে গানগুলো তৈরি করা, আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে কনসার্ট আয়োজন ও গানগুলোর মাধ্যমে নতুন নতুন যন্ত্র শিল্পী খুঁজে বের করা, এবি ফাউন্ডেশনের জন্য আর্থিক সুযোগ সৃষ্টি করা ও আইয়ুব বাচ্চুর ব্যবহৃত গিটার এবং অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে মিউজিয়াম তৈরি এ সমঝোতা চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া আইয়ুব বাচ্চুর সৃষ্ট গান অথবা এলআরবির কোনো গান প্রচার কিংবা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে হলে এশিয়াটিক ইএক্সপি এবং এবি কিচেনের অনুমোদন নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ফেরদৗস আইয়ুব চন্দনা বলেন, ‘১৮ অক্টোবর আপনাদের প্রিয় আইয়ুব বাচ্চুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। আমরা এই পাঁচ বছরে এসে একটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছি। আমরা এশিয়াটিক ইএক্সপির সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তির সাক্ষর করলাম। বাচ্চুর কাজগুলো নিয়ে সামনে হয়তো আরও সুন্দর কিছু কাজ আসবে। আপনারা জানতে পারবেন, দেখতে পারবেন—দেশবাসী তার প্রতীক্ষায় থাকেন আর সময় সবকিছু প্রেজেন্ট করে দেবে আপনাদের।’
ইরেশ যাকের বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চু আমাদের কাছে একজন কিংবদন্তি। তার রেখে যাওয়া সৃষ্টিকে আমরা চেষ্টা করব এগিয়ে নিয়ে যেতে, যেন আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাকে জানতে পারে এবং তার সৃষ্টিগুলোর চর্চা করে। এশিয়াটিক ইএক্সপি এবি কিচেনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত।’
মন্তব্য করুন