কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত একটি গান ‘ফুলেরও জলসায় নীরব কেন কবি’। এই গানের কথার মতোই নীরব হয়ে গেলেন খ্যাতমান নজরুল সংগীতশিল্পী মোহাম্মদ মফিজুর রহমান। তিনি সংগীতশিল্পীর পাশাপাশি নজরুল সংগীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন সরকারি সংগীত কলেজে।
গত ৩০ ডিসেম্বর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান এ গুণী শিল্পী। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার সমিতি-ঢাকা ও সরকারি সংগীত কলেজের আয়োজনে মফিজুর রহমানের স্মরণে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয় শোকসভা ও দোয়া মাহফিল।
সংগীত কলেজের পক্ষ থেকে ডালিম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘৩০ তারিখ সে যেদিন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, সেদিন সে আমাকে বলে ৩১ তারিখ আমার জন্য সময় রাখিস। আসলে সেদিনই তাকে আমাকে তার জন্য সময় রাখা লেগেছে। তার সঙ্গে আমার ক্যারিয়ার ৩৩ বছর। তার মতো কোনো বন্ধু, সহকর্মী আমি আর পাব না। সে একজন অমায়িক মানুষ ছিল। মফিজ যে নেই, এটা আমার এখনো বিশ্বাস হয় না।’
তার বাল্যবন্ধু খোরশেদ আলম বলেন, ‘মফিজ আমার একদম ছোটবেলার বন্ধু। আমরা বিকেলে একসঙ্গে খেলা করতাম। সে ভালো ফুটবলারও ছিল। পড়াশোনার জন্য একসময় আমরা দূরে চলে আসি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম তবুও দেখা হতো না ভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কারণে। তবে তার সঙ্গে আবার দেখা হয় ২০০৬ সালে একটা অনুষ্ঠানে। এরপর থেকে আবার আমাদের দেখা হয়। আমরা একসঙ্গে কক্সবাজার সমিতিতে কাজ করতাম। ও খুব দেশের জন্য ভাবত, নিজের এলাকার মানুষের কথা ভাবত। কিন্তু নিজের শরীরের প্রতি উদাসীন ছিল। অনেকবার বোঝাতাম নিজের দেখভাল করার জন্য কিন্তু ও পাত্তা দিত না। মানুষকে উপকার করতে খুব ভালোবাসত।’
শোকসভায় মফিজ রহমানের ছেলে সামির বলেন, ‘বাবা কলেজ এবং তার গ্রাম ও তার পরিবারকে খুব ভালোবাসত। আমারও ইচ্ছা ছিল তাকে প্রাউড ফিল করাব আমার কাজের মাধ্যমে। কিন্তু হলো না। বাবা আর নেই। তবে বাবা মানুষের জন্য যেমন উপকারী ছিল আমিও চেষ্টা করব তার মতো মানুষের জন্য কাজ করার।’
শোকসভায় মফিজুর রহমানের পরিবারসহ উপস্থিত হয়েছিলেন তার বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী এবং তার প্রিয় শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহিবুল মুকতাদিদ তানিন এবং মাইনুল আহসান বাবুল।
মন্তব্য করুন