‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি মুক্তির পর পেরিয়ে গেছে এক সপ্তাহ। এ কয়েক দিনে দর্শক ও তারকাদের কাছে তুমুল প্রশংসা কুড়িয়েছে ভারতীয় পরিচালক শ্যাম বেনেগাল নির্মিত এই বায়োপিকটি। সম্প্রতি স্টার সিনেপ্লেক্সে চলচ্চিত্রটি দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন এ ছবিতে অভিনয় করা শিল্পীরাও। এ সময় কালবেলার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান সিনেমায় সোহরাওয়ার্দী চরিত্র ফুটিয়ে তোলা অভিনেতা তৌকীর আহমেদ।
অভিনেতা তৌকীরকে ডাকা হয়েছিল এই সিনেমায় তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে অডিশনের জন্য। কিন্তু পরে তাকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী চরিত্রটি দেওয়া হয়। তাতে বাড়তি চাপবোধ করেননি অভিজ্ঞ এই অভিনেতা। তৌকীর বললেন, ‘এই ছবিতে আমি কাজ করতে চাইছিলাম। প্রথমে আমাকে ডাকা হয় তাজউদ্দীনের চরিত্রে অডিশনের জন্য। কিন্তু পরে জানতে পারলাম আমাকে সোহরাওয়ার্দী চরিত্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটাকে আমি প্রমোশনই মনে করেছি। কেননা, এখানে তাজউদ্দীন সাহেবের চরিত্রের ব্যপ্তির চেয়ে সোহরাওয়ার্দী চরিত্রটির ব্যপ্তি ও গুরুত্ব বেশি ছিল। সেই জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি—আমার অভিনেতা ও পরিচালক জীবনের অভিজ্ঞতা এবং আমার ব্যক্তিগত অভিনয় ধারণা, সবকিছু মিলিয়ে কাজটি করার’।
সোহরাওয়ার্দী চরিত্র ফুটিয়া তোলার চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তৌকীর বলেন, ‘আসলে শিল্পের যে কোনো কাজই একটি চ্যালেঞ্জ। ঐতিহাসিক চরিত্র ফুটিয়ে তোলা আরও কঠিন। কারণ সেটি মানুষের পারসেপশনে আছে, ইতিহাসের পাতায়ও আছে। সুতরাং, সেটিকে যেনতেনভাবে উপস্থাপন করা যায় না। সেই ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে এবং ভেবেচিন্তে কাজটি করতে হয়েছে। অভিনয়শিল্পীর কাজই তো চরিত্র ফুটিয়ে তোলা।
সোহরাওয়ার্দী চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে নানান বইপত্র ঘাটতে হয়েছে তৌকীরকে। তার ইংরেজি ও বাংলা বলার ধরন রপ্ত করতে হয়েছে এই অভিনেতাকে। তৌকীর বলেন, ‘মূলত তার (সোহরাওয়ার্দী) জীবনী এবং তার ওপর লেখা বিভিন্ন বই আমাকে হেল্প করেছে। কিছু ব্যক্তির অভিজ্ঞতা থেকেও তথ্য পেয়েছি, যারা তাকে দেখেছেন। অনেকের স্মৃতিচারণের মধ্যে থেকেও তার সম্পর্কে জেনেছি। তার ইন্টারভিউয়ের কিছু ফুটেজ আমি অনলাইনে পেয়েছি। সেগুলো কাজে লেগেছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটা ব্রিফ দিয়েছিলেন। এসব মিলিয়েই চরিত্রটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি’।
সবাইকে সিনেমাটি দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে তৌকীর বলেন, ‘আপনারা দেখবেন ছবিটি। দেখে মতামত জানাবেন নিশ্চয়ই। কারো হয়তো ভালো লাগবে, কারো হয়তো লাগবে না। তারপরও ছবিটা আপনাদের ইতিহাসের বিভিন্ন সূত্র দেবে। আমার ধারণা সিনেমাটি আপনাদের খারাপ লাগবে না’।
সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঢাকাই সিনেমার অভিনেতা আরিফিন শুভ। ছবিতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ আহমেদ। অন্যান্য চরিত্রে আছেন দিলারা জামান, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, ফেরদৌস আহমেদ, দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, মিশা সওদাগরসহ দেশের শতাধিক শিল্পী।
সিনেমাটির ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্বে আছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনার এই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন অতুল তিওয়ারি ও শামা জাইদি। এতে অ্যাকশন ডিরেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন ম্যাম কৌশল। সিনেমার পোশাক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন পিয়া বেনেগাল।
মন্তব্য করুন