শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে ১৩ অক্টোবর। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কিশোরবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিব্য জ্যোতি। বঙ্গবন্ধুর চরিত্র কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারলেন কালবেলার সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন এ অভিনেতা। বললেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করার জন্য আলাদা কিছু করতে হয়নি। আমরা আসলে সব সময় বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে থাকি। এই ছবি করতে গিয়ে আমি বঙ্গবন্ধুকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি, টুঙ্গিপাড়ার একজন সাধারণ মানুষ কীভাবে ধীরে ধীরে জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠলেন। এ কারণে ভিন্ন রকম একটি অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এটা একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা যে বঙ্গবন্ধুর শৈশবের চরিত্রে অভিনয় করতে পেরেছি। প্রতিটি অভিনেতার সুপ্ত বাসনা থাকে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করার। আমি আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে এমন একটি চরিত্রে রূপদান করার সুযোগ পেয়েছি। এটা সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছুই না। বাদ বাকি দর্শকরা আমার বিচার করবেন আসলে আমি কতটুকু সফল হতে পেরেছি।’
অভিনয়কে আঁকড়ে ধরে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দিব্য বলেন, ‘সুস্থ ধারার ছবিতে কাজ করে যেন দর্শকের কাছে থাকতে পারি এটা আমার একমাত্র আশা। আমি আসলে ভালো কাজের মাধ্যমে, সুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে তাদের কাছে থাকতে চাই।’
ওটিটি, নাটক ও সিনেমা—কোন মাধ্যমে আপনার ভালো লাগে? জবাবে দিব্য বলেন, ‘সব মাধ্যমে থাকতেই আমি ভালোবাসি। সত্যি কথা বলতে কী আমি ক্যামেরার সামনে থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এরকম ইন্টারভিউ হলে একটু লজ্জা পাই। তা ছাড়া ক্যামেরার সামনে সব রকম চরিত্রে রূপায়ণ করতে ভালো লাগে। তখন সে ভয় আমার চলে যায়। আসলে ওটা আমার স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা। প্রথমে বাসায় আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি; তারপর ক্যামেরা। ক্যামেরার সামনে গেলে মনে হয় আমার লাইফে যেটা করি, সেটিই করছি। বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সুতরাং এটা একটি বাড়তি পাওয়া, দর্শক আমাকে ভালোবাসে।
আগামীতে নিজেকে কোন জায়গায় রাখতে চান? উত্তরে দিব্য বলেন, ‘কোনো জায়গায় না। এখন দর্শক আমাকে যেভাবে ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছে, সে জায়গায় থাকতে চাই। দর্শকরা যেভাবে ভালোবাসে, আশা করি আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারব। আমি এখন কিছু ভালো কাজ করছি, তাতে দর্শকের ভালোবাসা পাচ্ছি। আমি আসলে দর্শকের ভালোবাসার কাঙাল হয়ে থাকতে চাই।
সিনেমাটি মুক্তির পরের দিনই অভিনেতা দিব্যর জন্মদিন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে মন্ত্রী সাহেব তারিখ ঘোষণা করলেন, তখনই মনে হলো পরের দিনই আমার জন্মদিন। তিন বছর ছবিটি নিয়ে কাজ করছি। এত বড় একটি কাজ আবেগ তাড়িত হওয়ার মতোই। আমি আসলে একটা ঘোরের মধ্যে আছি যে কাজটা শেষ হয়ে গেল অবশেষে। সত্যিই আমি একটু আবেগ-তাড়িত হয়ে আছি।’
সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের উদ্দ্যেশে দিব্য বলেন, ‘সিনেমা একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যেটা আমি বিশ্বাস করি। এই সিনেমাটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর যে সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার জার্নিটা, সেটা দর্শক একটু হলেও অনুভব করতে পারবেন মন্ত্রী সাহেব যেটা বলেছেন—এটি ইতিহাসের একটি দলিল, এটি শুধু একটি সিনেমা নয়। সিনেমার ভালো-মন্দ হয় কিন্তু ইতিহাসের ভালো–মন্দ হয় না। শুধু ইতিহাস জানার জন্যই এই সিনেমাটি দেখা উচিত। আমার বিশ্বাস দর্শক সিনেমাটি দেখবেন এবং ভালো হোক মন্দ হোক দর্শক সিনেমাটি দেখে রিভিউ জানাবেন।’
অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন দিব্য। শৈশবের স্কুলকে বেশ মিস করেন তিনি। এ বিষয়ে বললেন, ‘আমি আসলে এখনো স্টুডেন্ট আছি। ফিলিংসটা বদল হয়নি। কিন্তু স্কুলের অনুভূতি একটু অন্য রকম। আমার বন্ধু-বান্ধব খুব কম। শিক্ষকদের কাছে আমি সেই ক্লাস থ্রির দিব্যই আছি। আমি সময় সুযোগ পেলে স্কুলে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করি। খুব নস্টালজিক একটা ফিলিংস।’
মন্তব্য করুন