ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী ও জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন হেলেনা জাহাঙ্গীর এবং অভিনেতা রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে মামলা করেছেন নেসার উদ্দিন বাহাদুর নামে এক ব্যক্তি। রোববার ৬ অক্টোবর ঢাকার আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মতিঝিল থানা পুলিশকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাসেল মিয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তার কথিত বোন বলে পরিচয় দেয়। নিজেকে অত্যন্ত প্রতাপশালী বিখ্যাত চিত্রনায়ক বলে দাবি করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘পাপমুক্ত’ সিনেমার একটি বক্তব্য নেসার উদ্দিনের দৃষ্টিগোচর হয়।
সেই বক্তব্যে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বলতে শোনা যায়, ‘ওজু করে হলে গিয়ে সিনেমা দেখে বের হয়ে নামাজ পড়তে পারবে।’
তার এ ধরনের বক্তব্য সমস্ত মুসলিমের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক ও ন্যক্কারজনক, যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। তিনি অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিতভাবে সচেতন অভিপ্রায়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন।
এদিকে রাসেল মিয়া গত ২১ সেপ্টেম্বর তাদের মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে থানায় গিয়ে আবারও কোরআন শরিফ ছুঁয়ে মিথ্যা বলতে দেখা যায়। এভাবে একাধিকবার কোরআন শরিফ ছুঁয়ে মিথ্যাকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালায়, যা মুসলিম সমাজে কোরআন অবমাননা ও চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীর নিদর্শন।
ধর্মকে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে হেলেনা জাহাঙ্গীর ইসলাম ধর্মবিরোধী কথা বলে এবং রাসেল মিয়া পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে মিথ্যা শপথ করে সারা দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে সচেতন অভিপ্রায় নিয়ে আঘাত করে।
এ ছাড়াও গেল ২০২২ সালে ২ সেপ্টেম্বর ভাইয়ারে সিনেমা মুক্তির সময় সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচিত-সমালোচিত পাপমুক্ত নায়ক রাসেল মিয়াকে কোরআন শরিফ ছুঁয়ে মিথ্যা বলায় দায়ে তাকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে বলে জানা যায়।
এ নিয়ে মামলার বাদী মো. নেসারউদ্দিন বাহাদুর (কায়েস) বলেন, ‘আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় গেল কয়েক বছর আগে হেলেনা জাহাঙ্গীর পাপমুক্ত শিরোনামে সিনেমার একটি বক্তব্য আমার দৃষ্টিগোচর হয়।
মামলাটির পক্ষে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মনসুর (রিপন) জানান, ধর্মীয় অবমাননার বিষয়গুলো আমরা একাধিক প্রমাণ সহকারে আদালতে জমা দিয়েছি। আদালত আমাদের প্রমাণের সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মতিঝিল থানায় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর আমরা দুই বিবাদীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য আবেদন করব।
রাসেল মিয়া বর্তমানে জেলহাজতে আছে বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন