ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় জুটি চিত্রনায়ক ওমর সানী ও মৌসুমী। অনেকদিন ধরেই সিনেমায় তারা অনিয়মিত। যার কারণে সেভাবে আলোচনাতেও নেই তারা। এবার বহুবছর আগের একটি ছবি নতুন করে আলোচনায় আনলো তাদের।
ছবিটি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতার সময়কার। যেখানে চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে দেখা যায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে বেলুন ওড়াতে দেখা যায়।
ছবিটি এক যুগের বেশি সময়ের আগে হলেও, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই এক ছবির জন্যই না কি অনেক ভুগতে হয়েছে মৌসুমী ও তার পরিবারকে। সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় তেমনটাই জানালেন অভিনেতা ওমর সানী।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ওমর সানী ভ্লগ নামের একটি পেজ থেকে লাইভে এসে কথা বলেন এই চিত্রনায়ক। ‘অজানা কথা একদিন তো আসবেই আর সেদিন হচ্ছে আজকে। আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেন না’ ক্যাপশন দিয়ে ভিডিও বার্তায় বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে মৌসুমীর উপস্থিত থাকার সেই দুটি ছবি তুলে ধরেন সানী।
এরপর তিনি বলেন, ‘যে ছবিটা দেখলেন, এই ছবিটা বহু বহু বছর আগের। ছবিটা নিয়ে আমার পরিবারে একটা প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় গেছে। আমাদের চলচ্চিত্রের কিছু অসাধু মানুষ শিল্পী সমিতি বা যে কোনো জায়গা থেকে হোক, দুই-একজন তখনকার প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কাজটা করে যেন আমরা চলচ্চিত্রের কোনো জায়গায় অবস্থান করতে না পারি, এটা ছিল ড্যাম পলিটিকস। এবং এই পলিটিকসের তারা সফল হয়েছিল। ওই যে সবাই বলে, আমি একা কেন, হাজার হাজার, লাখো কোটি, কোটি কোটি মানুষ বলে—বীভৎস একটা সময় গেছে, আমি সেই সময়কালের কথা বলছি।’
ছবিগুলো ব্যাখ্যা দিয়ে ওমর সানী আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল সেদিন। ম্যাডাম খালেদা জিয়া তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। আর আমাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক সাহেব, তার স্ত্রী জোবাইদা ম্যাডাম সেখানে অবস্থান করছিলেন। তো দেখেন এই পাশে কিন্তু ববিতা আপার ছবি (লিজেন্ড ববিতা আপা), অন্য পাশে দেখবেন আমাদের প্রয়াত নায়ক মান্না। ওই সময়ে আমি কক্সবাজারে থাকার কারণে এ অনুষ্ঠানে আসতে পারিনি।’
এরপর ক্ষোভে রাগে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছবি কিন্তু সবার সঙ্গে থাকতে পারে। একজন ব্রোথেল গার্লের সঙ্গে থাকতে পারে, একজন চোরের সঙ্গে থাকতে পারে, একজন ডাকাতের সঙ্গে থাকতে পারে, সবার সঙ্গেই থাকতে পারে। আমরা কিন্তু জানি না, আমার সঙ্গেই দাঁড়িয়ে কোন মেয়েটা ছবি তুলছে, কোন ছেলেটা ছবি তুলছে, তার রাজনৈতিক পরিচয় কী? আমাদের জানার কথা না, কারণ আমরা শিল্পী। অনেকেই কোট করে অনেকে বলেন, আপনার সঙ্গে তো অমুকের ছবি আছে। ওই বেডা! তুই দেখছ না বেডা? আমরা একজন শিল্পী, আমাদের সঙ্গে সবার ছবি থাকতে পারে। তাই বলে আমরা কিন্তু পচে যাইনি।’
ভিডিও বার্তায় নানাভাবে হেনস্থা হওয়ার কথা উল্লেখ করে সানী বলেন, ‘আজকে যে ঝড় আমি ওমর সানী ফেস করেছি, মাত্রই হেঁটে আসছি, প্রচুর ঘামছি—আর এই কথাগুলো বলতে গিয়ে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছি। ঘাম ছুটছে আমার শরীরে। সেই বিভৎস ঘটনা বহু বছর পরে আপনাদের জানালাম, আপনাদের বিচার দিইনি। বিচার তো আল্লাহ করবেন।’
ভিডিওর শেষে তার পরিবারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন এই অভিনেতা। তার এই ভিডিওটি মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন