মার্কিন অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো। ষাটের দশকে রূপালি পর্দায় দুর্দান্ত অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করেছিলেন এই অভিনেত্রী। তার লস অ্যাঞ্জেলেসের হেলেনা ড্রাইভের বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলার হাত থেকে অবশেষে রক্ষা পেয়েছে। জানা গেছে, বাড়িটিকে মিউজিয়াম হিসেবে তৈরি করা হতে পারে।
অভিনয়ের টাকা জমিয়ে ১৯৬০ সালে ৭৫ হাজার ডলারে ১২৩০৫ ফিফথ হেলেনা ড্রাইভের বাংলো ধরনের বাড়িটি কিনেছিলেন মেরিলিন। যার আয়তন ছিল ২ হাজার ৯০০ বর্গফুট। একতলা এ বাড়িটিতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সুইমিংপুল, সুন্দর লন আর সাতটি বেডরুম। তার বাড়ির সামনে নামফলকে লেখা ছিল ‘আমার যাত্রা শেষ হলো’।
সে সময় চিত্রনাট্যকার আর্থার মিলারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে একসময় তাদের সম্পর্কটা ভেঙে যায়, কিন্তু মনরো সেই বাড়িতেই থেকে যান। পরে ১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট মারা যান মেরিলিন। তদন্তে জানা গিয়েছিল, ড্রাগ ওভারডোজের কারণে মৃত্যু হয়েছিল এই অভিনেত্রীর। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
মেরিলিন মনরোর মৃত্যুর পর তার বাড়িটি বেশ কয়েকবার হাতবদল হয়েছে। এ বছর শুরুর দিকে গ্লোরি অব দ্য স্নো ট্রাস্ট ৮ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলারে কিনে নিয়েছিল বাড়িটি। তখন থেকেই চলছিল বাড়িটি ভাঙার প্রস্তুতি। কিন্তু তার ভক্তরা বাড়িটিকে বিশেষ নজরে রেখেছিল।
সম্প্রিত বাড়িটি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিল। তবে ভক্ত ও প্রতিবেশীদের প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে তারা। মূলত, বাড়িটি বেশ পুরোনো হয়ে যাওয়াই ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয় সিটি কাউন্সিল।
এর পরেই বাড়িটি না ভাঙার দাবিতে ফোন ও ই-মেইলের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান আশপাশের বাসিন্দা ও মেরিলিনের ভক্তরা। অবশেষে বাড়িটি ভাঙার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সিটি কাউন্সিল। তবে তারা জানিয়েছে, বাড়িটিকে ঠিকঠাক রাখতে হলে রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। এজন্য একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। এই কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানাবে কীভাবে টিকিয়ে রাখা যায় বাড়িটি।
সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ট্রসি পার্ক বলেন, ‘মেরিলিন আমাদের কাছে শুধু অভিনেত্রীই নন, তিনি এক দৃষ্টান্ত। ছোটবেলা থেকে অনাথালয়ে বেড়ে উঠেছেন। হাজারো প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে একসময় হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি। বাড়িটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হলেও প্রতিবেশী ও তার অনুরাগীদের অনুরোধে আমরা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছি। বাড়িটিকে হলিউডের ইতিহাস ধারণের অংশ হিসেবে ও লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাস, সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। সম্ভব হলে বাড়িটিকে মিউজিয়ামও বানানো হতে পারে।’
মন্তব্য করুন