
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন ক্লাসে ফিরেছেন। দীর্ঘ এক মাস পর আজ সোমবার সহপাঠীদের সঙ্গে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেন তিনি।
ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত তিনি।
ফুলপরী বলেন, ‘আজকে প্রথম দিনের ক্লাসের মতো অনুভূতি হচ্ছে—যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সহপাঠী ও শিক্ষকদের আন্তরিকতা আমাকে আরও বেশি মুগ্ধ করেছে। আমি প্রথমে অনেক ভয়ে ছিলাম। তবে এখন সবকিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।’
তার সহপাঠীরা বলেন, ‘ফুলপরী যে সাহসিকতা দেখিয়েছে তা আমাদের বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গর্বের। যে কোনো সময়, যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সব সময় তার পাশে থাকব। আমরা আমাদের জায়গা থেকে তাকে সব বিষয়ে সহযোগিতা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত খুব বেশি ক্লাস হয়নি। আমরা তার একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তার সহপাঠীদের আমি বলে দিয়েছি, তার পড়াশোনায় যেন কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে।’
এদিকে গত ৪ মার্চ পছন্দের হল বরাদ্দের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। পরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সিট বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন ফুলপরী। গতকাল রোরবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে পছন্দের হলে ওঠেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করেন ফুলপরী খাতুন। অভিযোগপত্রে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড়, বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণসহ নানাভাবে নির্যাতন করার ঘটনা উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। গত ৪ মার্চ অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে হল থেকেও বহিষ্কার করা হয় অভিযুক্তদের।