ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ দুই সদস্যকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাময়িক বহিষ্কার করেছে। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত দুজন হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইমুর রহমান দুর্জয় এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাকিব ফেরদৌস। তারা দুজনই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাময়িক বহিষ্কারের এই অনুমোদন দেন। তাদের দুজনকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সাত দিনের মধ্যে তাদের লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হলের সামনে অপরাধবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধর করেন তারই একদল সহপাঠী। তখনই ‘প্রলয়’ নামে ক্যাম্পাসভিত্তিক একটি গ্যাংয়ের কথা গণমাধ্যমের খবরে আসে।
এ ঘটনায় রোববার জোবায়েরের মা ওই চক্রের ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে দায়ী করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার পর এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
‘প্রলয় গ্যাং’ শনাক্তে তদন্ত কমিটি
এদিকে প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যদের শনাক্তে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভায় আন্তঃহল কমিটি গঠনের কথা জানানো হয় আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইকবাল রউফ মামুনকে আহ্বায়ক এবং সহকারী প্রক্টর এম এল পলাশকে সদস্য সচিব করা হয়েছে কমিটিতে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, স্যার এ এফ রহমান হল, কবি জসীম উদদীন হল, জগন্নাথ হল, হাজী মুহম্মদ মহসিন হল, বিজয় একাত্তর হল, জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ।
কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে উপাচার্যকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথিত ‘প্রলয় গ্যাং’ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর উত্থানের কথা জানা যায়। কথিত এই গ্যাংয়ের সদস্যদের আচরণে বখাটেপনা ও উচ্ছৃঙ্খলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি এই ‘গ্যাং কার্যক্রম’ কোনোক্রমেই কাম্য হতে পারে না। যেসব শিক্ষার্থী এই ‘গ্যাং অপকর্মে’ জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।