মৌলিক গবেষণায় অসাধারণ অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের সাতজন গবেষককে ‘মির্জা বানু এন্ড সিরাজুল ইসলাম এন্ডাউমেন্ট ফান্ড’ বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গবেষকদের হাতে এই বৃত্তির চেক তুলে দেন।
ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিসটিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ অনুষ্ঠানে ‘স্বৈরশাসকদের উত্থানের পথরেখা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন। অধ্যাপক ড. এম সিরাজুল ইসলামসহ বিভাগীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম ও প্রয়াত মির্জা বানুর মেয়ে এবং ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আশা ইসলাম নাঈম অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বৃত্তিপ্রাপ্ত গবেষকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছেন। এ ধরনের বৃত্তি প্রদান কার্যক্রম গবেষকদের মেধা ও মননের স্বীকৃতি দেয় ও উৎসাহ প্রদান করে।
ন্যায্যতা ও সাম্যের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন সমাজ গঠন এবং জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য তিনি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বিভিন্ন তত্ত্ব, দার্শনিকদের মতামত এবং গবেষণার ভিত্তিতে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার স্বরূপ এবং স্বৈরাচারী শাসকদের উত্থান প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকরা যখন আগামীতে আর স্বৈরশাসক দেখতে চাননা বলে সংকল্পবদ্ধ, সেই সময়ে স্বৈরশাসক কীভাবে তৈরি হয়, কীভাবে তৈরি হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপট এবং পথরেখা বোঝা দরকার। এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই সেই কৌশল তৈরি করতে হবে। সেই শিক্ষা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা তৈরি করা।
তিনি আরও বলেন, এখন যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, তার উদ্দেশ্য হলো এই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, জবাবদিহিতার প্রক্রিয়া তৈরি করা, ক্ষমতার এককেন্দ্রিকরণের পথ বন্ধ করা। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোই যথেষ্ট নয়। আদর্শিকভাবে এই ধরনের চিন্তা ও কাজ এবং আদর্শকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা জরুরি।’
বৃত্তিপ্রাপ্ত চারজন পিএইচডি গবেষক হলেন, তপন কুমার পালিত, এ এস এম মোহসীন, খাদিজা খাতুন এবং শহিদুল হাসান।
এ ছাড়া ৩জন এমফিল গবেষক হলেন, ইদ্রিস আলী, লাবনী ইসলাম চুমকী এবং সুরাইয়া আক্তার।
মন্তব্য করুন