বিদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি সেমিস্টারে দেশ থেকে টিউশন ফি পাঠাতে হয় তাদের অভিভাবকদের। এটি বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স হিসেবে বিদেশে যায়। এখন থেকে এমন রেমিট্যান্স বা টিউশন ফির ওপর কোনো উৎসে কর নেবে না সরকার। ২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে এ ধরনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
টিউশন ফিসহ ছয় ধরনের কাজে বিদেশে অর্থ পাঠাতে উৎসে কর কেটে রাখার বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। অন্য পাঁচটি খাত হলো— বিদেশের কোনো কর্তৃপক্ষকে অর্থ পরিশোধ, পেশাজীবী সংগঠনের চাঁদা পরিশোধ, বিদেশে অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানের লিয়াজোঁ অফিস, বিদেশে পণ্য উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ এবং নিরাপত্তা জামানত।
ইউনেস্কোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালে শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষায় বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫২ হাজার ৭৯৯ জন। কয়েক বছর ধরে এ সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে ২০২১-এর তুলনায় ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৬০ শতাংশ। সাধারণত দেশের বাইরের স্কুল-কলেজে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচ ডলারে পরিশোধ করতে হয়।
বিদেশে অবস্থানর এসব শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা মূলত দেশের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে খরচ পাঠান। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিশেষ ব্যাংক হিসাবের (স্টুডেন্ট ফাইল) মাধ্যমে বিদেশে এ অর্থ পাঠান। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সেই অর্থ পাঠানোর সময় উৎসে কর কাটবে না।
প্রস্তাবিত বাজেটে এ ধরনের সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে। মালয়েশিয়া ও চীনেও অনেকটা নিজের খরচে পড়তে যান অনেক শিক্ষার্থী। এছাড়া জাপানসহ ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আছেন।
সাধারণত বিদেশে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধের সময় ৩০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হয়। ডলার–সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক বিদেশে টিউশন ফি বাবদ ডলার পরিশোধে অনীহা দেখায়। এখন এই ডলারে টিউশন ফি পরিশোধে উৎসে কর কাটা হবে না।
মন্তব্য করুন