ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা পেছানোর দাবি

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাইশা। ছবি : কালবেলা
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাইশা। ছবি : কালবেলা

২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাইশা নামে এক শিক্ষার্থী।

বুধবার (১২ মে) বেলা সোয়া ১১টায় শাহবাগ মোড়ে গণমাধ্যমের কাছে এ দাবি জানান তিনি। এর আগে, সকাল ১০টায় একই দাবিতে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও আর কেউ উপস্থিত না হওয়ায় তিনিই সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত কিছু যুক্তি তুলে ধরেন।

এসময় এই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা হয়ত আরও আগে আমাদের সমস্যার কথা জানাতে পারতাম। কিন্তু এখন এত দেরিতে কেন জানাচ্ছি? কারণ হলো, আমাদের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট পরীক্ষা চলছিল এবং এরপর রোজা, ঈদের ছুটি, এর পরবর্তী সময়ে ফর্ম ফিলাপ, রেজিস্ট্রেশন কার্ড বিতরণসহ বিভিন্ন একাডেমিক কার্যক্রম চলতে থাকায় এই বিষয়ে আমরা জানানোর মতো যথেষ্ট সময় আর সুযোগ, কোনোটিই পাইনি। যাই হোক, যেহেতু আন্দোলন নামিয়েছি, কাজেই এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করাও আমাদের দায়িত্ব। সেই প্রসঙ্গেই যাচ্ছি!

তিনি বলেন, যেই সিলেবাসের জন্য ২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে মাঠে নেমেছিল, সেই একই সিলেবাস আরও কম সময়ে ২০২৪ সালের শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া নির্ঘাত বৈষম্যমূলক আচরণ। কাজেই এই আন্দোলন কোনো হেয়ালি না। এর যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে।

প্রয়োজনের তুলনায় কম কার্যদিবস উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদিও দেখাচ্ছে যে, ২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীদের গতবছরের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মোট ১৭ মাস সময় দেওয়া হয়েছে, তবুও এই মতামত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কেননা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে দেশে প্রায় সব কলেজেই এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে নির্বাচনী পরীক্ষার পর দেশের কোনো কলেজেই আর ক্লাস হয়নি। এমনকি অধিকাংশ কলেজই সম্পূর্ণ সিলেবাস শেষ না করিয়েই শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষায় বসাতে হয়েছে। কাজেই শিক্ষার্থীরা প্রকৃতপক্ষে ১৩ মাস শ্রেণি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এর মধ্যে আবার ক্লাস টেস্ট, প্রি-টেস্ট, ইয়ার ফাইনাল, ইত্যাদি পরীক্ষায় অনেক কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস এবং ১৭ মাস সময় দেওয়ার পরও একই বছরে ৫-৬টা পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল শিক্ষার্থীদের, যা দিতে কমপক্ষে ২০-২৫ দিন সময় লাগে। ফলে এইচএসসি ২০২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সর্বসাকুল্যে ৮-৯ মাস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে। কাজেই কোনো কলেজই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সম্পূর্ণ অংশ কলেজে পাঠদান করতে পারেনি, এটা নিঃসন্দেহে পরিষ্কার। শ্রেণিতে না পড়িয়ে পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের বসানো নিতান্তই অন্যায় ও জুলুম।

২য় বর্ষের শুরুতে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করে মাইশা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের জানুয়ারি অবধি দেশে চলমান নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখে। এরূপ অস্থিতিশীল পরিবেশের উদাহরণস্বরূপ রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যুর ঘটনাকে দেখানো যায়। পাশাপাপাশি বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের রাজধানীর মিরপুর, নীলক্ষেত, ঝিগাতলাসহ নানা অঞ্চলে চরম অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে দেখা যায়। ফলে সেই সময় অনেক কলেজই নিজেদের ইচ্ছা মাফিক পাঠদান চালিয়ে গিয়েছে যা শিক্ষার্থীদের সাথে গড়িমসি ছাড়া কিছুই না।

২য় বর্ষের সিলেবাস অসম্পূর্ণ রেখে নির্বাচনী পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগীয় বিষয়গুলোর ১ম পত্রের জন্য সব কলেজে ক্লাসের সংখ্যা মোটামুটিভাবে ঠিক থাকলেও (যদিও তা যথেষ্ট ছিল না) এসব বিষয়ের ২য় পত্রের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ক্লাস নিতে ব্যর্থ হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কেননা শিক্ষার্থীরা বর্ষ পরিবর্তন পরীক্ষা শেষ করার মাত্র ৩-৫ মাসের মাথায় দেশের অধিকাংশ কলেজে নির্বাচনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের বসানো হয়। এত করে যথেষ্ট ক্লাস না পাওয়ার ২য় পত্রে শিক্ষার্থীদের সঠিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে নিঃসন্দেহে ব্যর্থ হয়েছে দেশের প্রতিটি কলেজ। কাজেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য যথাযথ প্রস্তুত না করে তাদের জোরপূর্বক পরীক্ষায় বসানো নিতান্তই হাস্যকর অপপ্রয়াস।

অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির বিষয়ে মাইশা বলেন, পুলিশের ভয়ে হয়তো কেউ আসেনি। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে এতে অংশ নিতে এসেছিলাম। আমি এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি না, আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের যে দাবিগুলো ছিল সেটা আমি শুধু জানিয়েছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কলকাতার তরুণীর আইফোন চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার

ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

চিকিৎসক সংকটে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

স্বাগত হিজরি নববর্ষ ১৪৪৬, কী এর ইতিহাস ও তাৎপর্য

চলতি বছর ছক্কা ‘খাওয়া’য় উদার মোস্তাফিজ

নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে ৫ জনের মৃত্যু

বিপৎসীমার ওপরে যমুনা, ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর পানি

ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে লেবাননের যোদ্ধাদের হামলা

দেশে ফিরেছেন ৫৬ হাজার ৩৩১ হাজি, মৃত্যু বেড়ে ৬২

অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত থাকায় ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

১০

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ বিভাগে ভর্তির ব্যবহারিক পরীক্ষা স্থগিত

১১

কোচকে পাত্তাই দেন না ব্রাজিলের ফুটবলাররা!

১২

বৃক্ষরোপণের মহোৎসব / ‘এক আঙিনায় তিনটি গাছ, শান্তিতে থাকি বারো মাস’

১৩

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

১৪

গাজায় ইসরায়েলি মেজর নিহত

১৫

সৌদি আরবে নিহত শ্রমিকের মরদেহ দেশে আনতে চান পরিবার

১৬

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিনের

১৭

রাক্ষুসে পদ্মা গিলে খেতে বসেছে শতশত বসতবাড়ি-দোকানপাট

১৮

৮ জুলাই : নামাজের সময়সূচি

১৯

সোমবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

২০
X