বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেছেন, যারা গণতন্ত্রের মোড়ল, যারা বাকস্বাধীনতার সার্টিফিকেট দেয়, যারাই বলে দেয় যে- কোন দেশটি গণতান্ত্রিক আর কোন দেশটি অগণতান্ত্রিক, যারা সারা জীবনের জন্য গণতন্ত্রের টেন্ডার নিয়ে নিয়েছে, ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন এর কথা বলে, একাডেমিক ফ্রিডমের কথা বলে, রাইট টু প্রোটেস্টের কথা বলে, রাইট টু অ্যাসেম্বলির কথা বলে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের মুখোশ আজ উন্মোচিত হয়ে গেছে।
সোমবার (৬ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংগঠনটির ‘পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও ছাত্র সমাবেশ’- এ সভাপতির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমাদের এই ছাত্র আন্দোলন আর দেশীয় গণ্ডির ভিতর সীমাবদ্ধ নেই। সীমান্ত বেরিকেড, ভাষার ব্যবধান সবকিছু মুছে দিয়ে একাকার হয়ে গেছে যুদ্ধ-মুক্ত, ন্যায় ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। আমাদের এই ছাত্র আন্দোলনে সমবেত হয়েছেন নির্যাতিত নিষ্পেষিত ফিলিস্তিনের বন্ধুরাও। আমাদের পূর্বপুরুষরা নিজেদের দেশের মুক্তির জন্য বীরত্বের সঙ্গে যেভাবে লড়াই করেছে ঠিক তেমনি আমরাও ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের পাশে দাঁড়াবো।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবর্জিত নীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি আগ্রাসনের জন্য যারা অস্ত্র এবং অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে, ইতিহাসের কি অমোঘ পরিণতি, সেখান থেকেই এই দুর্বার প্রতিবাদের জয়ধ্বনি শুরু হয়েছে। যারা জাতিসংঘের সিকিউরিটি কাউন্সিলে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ভেটো দিয়েছে, সেই দেশের তারুণ্য আজ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে ‘হ্যাঁ’ বলেছে। ফিলিস্তিনের পক্ষে জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার যতবার ‘নো’ বলেছে, তার চেয়ে বহুগুণ জোর দিয়ে এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘ইয়েস’ বলেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে যারা কথা বলেছে এবং ইসরাইল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, পুলিশি হামলার শিকার হয়েও যারা কণ্ঠস্বরকে উচ্চ করেছে তাদের প্রতি ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে আমরা সংহতি জানাই, অভিনন্দন জানাই। কারণ, দশকের পর দশক ধরে গাজাকে যুদ্ধ নগরীতে পরিণত করে পুরো ফিলিস্তিনকেই ক্রমান্বয়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যেখানে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন চলছে, সেখানে আড়াইহাজারের মতো শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্দোলন করার কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিষ্কারাদেশ জারি করা হচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশি নাগরিক মাইমুনা ইসলাম নোহা স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কারাদেশের আওতায় নিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে বাঁচানোর জন্য তার শিক্ষক সামনে এগিয়ে গেলে তার পাঁজরের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের প্রতি ধিক্কার জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর এভাবে যারা নির্মম নির্যাতন ও নিষ্পেষণ পরিচালনা করে তাদের এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর সৈকত এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন