দেশের ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এসব বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য ছাড়াই শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে (ইউজিসি)। ভর্তি হয়ে কেউ প্রতারিত হলে ইউজিসি কোনো ‘দায়-দায়িত্ব নেবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি।
ইউজিসির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ১০৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৪টিতে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্য রয়েছেন।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত সতর্কীকরণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১১৪টি। এর মধ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছে ১০৪টি। অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। এর মধ্যে ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতির নিয়োগকৃত উপাচার্য নেই। ইউজিসি বারবার নির্দেশ দিলেও তা মানছে না এসব বিশ্ববিদ্যালয়।
ইউজিসি জানিয়েছে, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ ও কমিশনের নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে অননুমোদিত ক্যাম্পাস, অননুমোদিত প্রোগ্রাম বা অনুমোদিত প্রোগ্রামে কমিশন নির্ধারিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত আসনে শিক্ষার্থী ভর্তিপূর্বক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অননুমোদিত/অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকার জন্য কমিশন থেকে ইতোমধ্যে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অর্জিত ডিগ্রির মূল সার্টিফিকেট-এ স্বাক্ষরকারী হবেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস-চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেউ কোনো অননুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত ক্যাম্পাস, অননুমোদিত প্রোগ্রামে বা অনুমোদিত প্রোগ্রামে কমিশন নির্ধারিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত আসনে ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে এবং পরবর্তীতে কোনো আইনগত সমস্যা সৃষ্টি হলে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষিত অথবা প্রোগ্রাম বাতিল হলে বা অনুমোদিত আসন সংখ্যার অধিক আসনে ভর্তি হয়ে সনদ বাতিল হলে তার দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের উপর বর্তাবে না।
ইউজিসির সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস না থাকা, অনুমতিপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়াসহ নানা আইনভঙ্গের কারণে ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার সনদের কোনো বৈধতা নেই। ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ। আর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতেও সতর্কতা দিয়েছে ইউজিসি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত বিভাগের অনুমোদন আছে কি না—সেটিও ইউজিসির ওয়েবসাইটে দেখে নেওয়ার আহ্বান মঞ্জুরি কমিশনের।
মন্তব্য করুন