মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের নাঈম উর রহমান ১৩ মাস পর স্কুলের শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছে। নাঈম শ্রীমঙ্গলের দি বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারি ক্লাসের শিক্ষার্থী।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর কালবেলা ইউটিউব চ্যানেলে ‘দুষ্টুমি করায় শিশুকে ১৩ মাস স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছেন না শিক্ষকরা’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে তাদের হস্তক্ষেপে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেল নাঈম।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দি বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে শিশু শিক্ষার্থীর অভিভাবককে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নাঈমের পিতা আব্দুর রহমান জানান, আমার স্ত্রী ডা. নাদিরা খানম বরাবর বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্যাডে অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম প্রতিষ্ঠানের পিয়নের মাধ্যমে আমার বাসায় একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৩ নভেম্বর অত্র প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব গভর্নরসের বিশেষ সভার আলোচ্যসূচি-২ এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনার পুত্র নাঈম উর রহমানকে ১৪ নভেম্বর থেকে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার অনুমোদন দেওয়া হলো। আপনার ছেলেকে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার নিমিত্তে প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
চিঠি পাওয়ার পর শিশু শিক্ষার্থী নাঈমের পিতা আব্দুর রহমান বলেন, আমার ছেলের শিক্ষা জীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৩ মাস চলে গেল। সে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান থেকে বঞ্চিত হলো। মানসিকভাবে আমি এবং ছেলের মা প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছি, যা ঘটে গেল সেগুলো তো আর রিকভারি করা যাবে না। আমি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মীসহ যারা যেভাবে আমার ছেলের শিক্ষা জীবন বিপন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন, যাদের কল্যাণে ছেলে ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এর আগে শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বর্ধন বলেন, আইনজীবীদের লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার ও ইউএনও সাহেবকে নিয়ে মিটিং করেছি, আশা করি পজিটিভ সিদ্ধান্ত আসবে। অধ্যক্ষকে বলে দিয়েছি দ্রুত এটি সুরাহা করতে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, শিক্ষার্থীর বিষয়টি সুরাহা হয়েছে। এখন থেকে শিশু নাঈম ক্লাস করতে পারবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী শিশু শিক্ষার্থী নাঈম উর রহমানকে ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে ও তার ওপর চলমান মানসিক নিপীড়ন বন্ধ করতে শিক্ষা সচিব, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, শ্রীমঙ্গল ইউএনও, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, স্কুলের অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। নোটিশ পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে শিশু নাঈমের ওপর চলমান অমানবিক ও মানসিক নিপীড়ন বন্ধ করতে এবং তাকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় নোটিশদাতারা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য করুন