পাঁচ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পূর্ব মুহূর্তে মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে যেভাবে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে কার্যক্রমগুলো অগ্রসর হতো না ঠিক বর্তমান সময়েও একই ধারার কার্যক্রম চলছে অব্যাহত রয়েছে। এই লাল ফিতার দৌরাত্ম্যেই আটকে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজ।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো রেজাউল করিমের সঙ্গে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ, হল নির্মাণ, আবাসন ভাতা, জকসু নিবাচন, সমাবর্তন এবং জুলাই আন্দোলনে আহতের চিকিৎসা ও নিহতের ঘটনায় দোষীদের বিচারসংক্রান্ত বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জবি শাখা ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতি, আবাসন ভাতা, সমাবর্তন, জকসু নির্বাচন এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আপডেট নিতে গিয়েছিলাম উপাচার্য স্যারের কাছে। আপডেটের বিষয়ে যদি একটি কথায় বলি তাহলে আন্দোলনের আগে হাসিনা থাকাকালীন যে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ছিল সেটা আজও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী হলের বিষয়ে রাকিব বলেন, তারা আমাদের জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং অস্থায়ী হলের বিষয়ে আগামী সপ্তাহে অথবা তার পরের সপ্তাহে আরডিপি অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর মধ্যে একটি যৌথ মিটিংয়ের মাধ্যমে সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে।
আবাসন ভাতার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা পূর্বের রিভাইসড বাজেটে প্রস্তাব পাঠিয়েছে, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা অনুমোদন আসেনি। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ও ভাতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জকসু নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, জকসু নির্বাচনের যে খসড়া (যা বাংলায় অনুবাদ হয়েছিল), তা এখনো সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়নি। খসড়াটি প্রস্তুত হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অথবা ইউজিসির মাধ্যমে অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবে।
রাকিব বলেন, সমাবর্তন বিষয়ে তারা পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সমাবর্তনসংক্রান্ত আলোচনা করবেন। সম্ভাব্য সময় হিসেবে এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারি নির্ধারণ করা হতে পারে।
জুলাই আন্দোলনে আহতদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, যারা এ বিষয়ে আবেদন করেছেন, তাদের আবেদনগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রশাসন কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ গোছানোর চেষ্টা করছি। এটা তৈরি হয়েছে শুরুমাত্র ফ্যাসিস্টকে বিদায় করার জন্য। কিন্তু আজ আমরা দেখতে পাই, যারা ছাত্রলীগ, যারা ১৫ জুলাই আমার ভাই-বোনদের ওপর হামলা করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে সে ব্যাপারে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয় নি। তারা বলছেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয় নি। তাই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
রাকিব বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে সব ছাত্র, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে আলেচনা করে প্রয়োজনে আমরা প্রধান উপদেষ্টার নিকট যাবো। এসময় সেখানে অন্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম ও সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে মো. রাশিদুল ইসলাম সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন