জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) টিএসসি দখলদারির বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় মানহানির অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক।
এ বিষয়ে জানতে তাকে ফোন করা হলে প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যদি প্রমাণ না করতে পারে, তবে অভিযোগ তোলা শাহিনসহ সবার বিরুদ্ধে মামলা করব।’
তিনি বলেন, যাকে আমি চিনিও না তার কাছ থেকে কখন, কীভাবে চাঁদা চাইলাম। ওই মেয়েকেও প্রমাণ দিতে হবে তার কাছ থেকে কখন চাঁদা চাইলাম। এখন শুধু অভিযোগ দেওয়া রয়েছে, যদি তারা প্রমাণ না করতে পারে তখন আমি মামলার দিকে যাব। এক্ষেত্রে শুধু শাহীন না যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু শাহিন না, শাহিনসহ আরও যারা আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করছে প্রত্যেককে প্রমাণ দিতে হবে কার থেকে কখন, কোন মুহূর্তে, কীভাবে চাঁদাবাজি করেছি। আমি মামলাটা অজ্ঞাতনামা রেখেছি। আরও যদি কেউ থাকে তার নামেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ কখনো বলতে পারবে না, কারও কাছ থেকে এক পয়সা হারাম খেয়েছি। সেখানে আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফারুক বলেন, তাদের কথার ভিত্তিতে, কোনো প্রমাণ ছাড়া জাতীয় দৈনিকে আমাদের ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হলো। অথচ আমি কিছুই করিনি। দলীয়ভাবেও আমার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে এবং এক মাসের জন্য পদ স্থগিত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন ইতিহাস বিভাগের ছাত্র শাহিন আলম, শিহাব প্রান্ত ও নিশু। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানাধীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির দোকান উচ্ছেদের ঘটনায় কয়েকজনের নামে মানহানির অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। শাহিন মিয়া, শিহাব প্রান্ত ও মিশুসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৫ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রেরই দেওয়া স্টল উচ্ছেদ করে সেখানে আরেকজনের দোকান বসাতে চাইছিলেন ছাত্রদল নেতা ওমর ফারুক। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্র শিহাব প্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। প্রান্ত অভিযোগ করেন, তার কাছে চাঁদা চেয়ে না পাওয়ায় তার স্টল উচ্ছেদ করেন ওমর ফারুক।
এই বিষয়েই ভুক্তভোগী শিহাবের পক্ষে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন শাহিন আলম। তিনি লেখেন, ‘শিহাব নিজেও ছাত্রদলের কর্মী। জুলাই আন্দোলনের একজন যোদ্ধা। কতটা নিচু মানসিকতার হলে একজন সিনিয়র, যার ছাত্রত্বই নেই, সে তার জুনিয়রের কাছে চাঁদা দাবি করে! রানিং ব্যাচের একজন শিক্ষার্থীর কাছে চাঁদা দাবি করে! ছাত্রদল ক্ষমতায় আসার আগেই যদি নিজের দলের কর্মীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি শুরু করে, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কতটা নিরাপদ এদের কাছে?’
এ বিষয়ে শাহিন আলম বলেন, ‘এই পোস্ট করার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ওমর ফারুক ভাই- যাকে আমি ভালো করে চিনিও না- আমার নামে থানায় মানহানির অভিযোগ দিয়েছেন। অথচ অভিযোগ দেওয়ার কথা ছিল শিহাবের, কারণ তার দোকানটাই তো উচ্ছেদ করা হয়েছিল। আমি ১০০ বার চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলবো। যদি এজন্য আমার ফাঁসি হয়, সেটাও মাথা পেতে মেনে নেব ইনশাআল্লাহ।’
মন্তব্য করুন