চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০-৩২ বৃদ্ধি করে গেজেট প্রকাশ করায় বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে গেজেট দুধে চুবিয়ে সেই দুধ দিয়ে গোসল করে কমিটি বিলুপ্ত করে ৩৫ আন্দোলন থেকে বিদায় নিয়েছেন আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড ও আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে দুধ দিয়ে গোসল করা কর্মসূচি পালন করেন শুভ।
এ বিষয়ে শরিফুল হাসান শুভ বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ চেয়ে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। এমতাবস্থায় বর্তমান সরকার রাজপথে আন্দোলন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ৩৫-এর একটি সুপারিশ কমিটি করেন এবং সুপারিশ কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়ে সরকার বিবেচনা করে ১৮ নভেম্বর তারিখে ৩২-এর প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দূর করেন। এজন্য আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং দুধ দিয়ে গোসল করে আন্দোলন থেকে বিদায় নিলাম।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩২ বছর করে সোমবার (১৮ নভেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলোয় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। যেহেতু সংসদ ভাঙিয়া যাওয়া অবস্থায় রহিয়াছে এবং রাষ্ট্রপতির নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে। সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।
এতে বলা হয়, এই অধ্যাদেশ সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলোয় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪ নামে অভিহিত হবে। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, আদেশ, নির্দেশ বা আইনগত দলিলে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলি প্ৰাধান্য পাইবে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সব ক্যাডারের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতা-বহির্ভূত সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা হইবে ৩২ বছর। স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলোর চাকরির যে সব পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বা অনূর্ধ্ব ৩২ বছর উল্লেখ রয়েছে, সর্বত্র ওই বয়সসীমা ৩২ বছর প্রতিস্থাপিত হবে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা বা ক্ষেত্রমতো প্রবিধানমালা বহাল থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, এই অধ্যাদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশের বিধানের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করিতে পারিবে।
মন্তব্য করুন