রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাবলিগ জামায়াতের মাওলানা জুবায়েরুল হাসানের অনুসারী ও কওমিপন্থি আলেম-উলামাদের ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনে আসা লোকজনের ভিড় জমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসের সবখানে। এসময় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেললেও স্থান পরিত্যাগ করার আগে তাবলীগের অনুসারীরা পরিষ্কার করেও গেছেন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।
পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনাকারীরা জানান, সম্মেলনে বিশাল সংখ্যক জমায়েত হওয়ায় প্রাথমিকভাবে আমরা সুষ্ঠু পরিচালনা করতে পারিনি। তবে সম্মেলনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পরে থাকা পলিথিন, কাগজ, বোতলসহ বিভিন্ন আবর্জনা পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
‘দ্য বিউটি অব ডিইউ ক্যাম্পাস’ নামক এক ফেসবুক পেইজ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে বলা হয়, ‘সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, টিএসসি, কলাভবন, কার্জনহল ও এর আসে পাশের এলাকা পরিষ্কার করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাবলিগের সাথীরা’।
মুরাদ হাসান নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, তাবলিগ জামায়াতের মহাসমাবেশে যারা এসেছিলেন, তাদের অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ যারা ইউনিভার্সিটির পরিবেশের সাথে মোটেও পরিচিত নন। এমনকি ঢাবির ক্যাম্পাসও তাদের চেনার কথা নয়। আজকের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য দায়ী ঢাবি প্রশাসন এবং আয়োজক কমিটি। ঢাবি প্রশাসন যদি উদ্যানের গেটগুলো বন্ধ করে দিতো, পার্কিংয়ে বাঁধা দিতো তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। অপরদিকে আয়োজক কমিটি যদি পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করার পাশাপাশি টয়লেট, পানি, খাবারের স্থান কিংবা নামাজের পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করতো, তাহলেও এই অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার তৈরি হতো না।
তিনি বলেন, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাবলিগের সাথী ভাইয়েরা ক্যাম্পাস পরিষ্কার করেছেন এবং প্রসাবের জায়গাগুলোও ধুঁয়ে পরিষ্কার করছেন। যারা সমালোচনা করেছেন, তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু টুপি পাঞ্জাবিতে যাদের চুলকানি, তাদের এখান থেকে শিক্ষা নিতে বলবো। এর আগেও অসংখ্যবার ঢাবিকে জঘন্যভাবে নোংরা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নাই। এমনকি তাদেরকে নিয়ে এত বেশি সমালোচনাও হয় নাই। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই রচিত হোক আগামীর পথ।
জামাল উদ্দীন খালিদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কাজ দিয়ে মন জয় করতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাবলীগের ভাইরা আশা করি আমাদের মন জয় করতে পেরেছে। ভুলের পর সমালোচনার প্রতিউত্তর এত সুন্দরভাবে দিতে তাবলিগের সাথীরাই। এটাই তাবলিগের ঐতিহ্য।
মন্তব্য করুন