পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘৫০০ শিক্ষক ভিসি হতে চান, বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ পড়াতে চান না।’ উপদেষ্টার এ কথাকে উদ্বৃতি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন -
‘এইটা একটা অসাধারণ ঘটনা। বাংলাদেশের আপামর মানুষজন নিজে প্রশাসক হতে চায় বা আপন কেউ প্রশাসক হলে তাকে ব্যবহার করে দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে চায়। বিসিএসেও সবাই প্রশাসক হতে চায়। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরাও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এনসিটিবিটিতে পদায়ন পেতে পাগল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। যে কি না সদ্য পিএইচডি করে এসেছে এবং মাত্রই অধ্যাপক হয়েছে। এইবার তার দেওয়ার পালা। শ্রেণিকক্ষে পড়াবে, ছাত্রদের থিসিস সুপারভাইস করাবে। কেন জানি আমাদের দেশে পিএইচডি একখান করতে পারলে আর একবার অধ্যাপক হয়ে গেলেই মনে করে এইবার শিক্ষকতার ইতি টেনে রাজনীতি ও প্রশাসনে কীভাবে যাওয়া যায় নজর থাকে সেইদিকে।
একজন অধ্যাপক কীভাবে প্রভোস্ট কিংবা প্রক্টর হতে চায় এইটা আমার মাথাতেই ঢুকে না। প্রভোস্ট হওয়া মানেতো হোটেলের ম্যানেজার। এই কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খ্যাতিমান শিক্ষককে কেন দায়িত্ব দিতে হবে? এর মাধ্যমে মেধার কত অপচয় বুঝতে পারছেন? প্রক্টর পদত আরও জঘন্য যেখানে একজন শিক্ষককে মারামারি, ঝগড়াঝাটি মেটানোর মতো পুলিশি কাজ করতে হয়। সবাই এইটা হতে চায় কারণ শুনেছি প্রক্টরদের না কি অনেক ইনকাম। আর প্রভোস্ট হলে একটা বাংলো পায়।
প্রায় ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার নিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো পদই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি ট্রেজারার পদ, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি প্রোভিসি এবং ট্রেজারার পদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের প্রভোস্ট ও প্রক্টর পদ। বুঝতে পারছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কতজন শিক্ষক প্রশাসক পদে নিয়োজিত।
এই এইবার আবার ভালো গবেষক দেখে ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো শিক্ষক প্লাস গবেষকদের একটা বড় অংশই এখন প্রশাসক। এরা শিক্ষকতা ও গবেষণা থেকে বলা যায় দূরেই থাকবে। কি সাংঘাতিক ব্যাপার না?’
মন্তব্য করুন