বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক, বর্তমান শিক্ষক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে কালবেলা। নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এলএলবি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাবাহ্ সুন্নাহ রহমান বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমাদের আরও সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও ঢেলে সাজাতে হবে। বহির্বিশ্বের সিলেবাসের সঙ্গে আমাদের সিলেবাসের কিছুটা হলেও মিল রেখে প্রণয়ন করা উচিত।
এমসি কলেজের শিক্ষার্থী নাঈমা রহমান রিয়া বলেন, সর্বক্ষেত্রে শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। আমাদের মনে রাখা উচিত, শিক্ষকদের অসম্মান করে কেউ কোনোদিন উন্নতি করতে পারবে না।
এমসি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও দৈনিক আধুনিক কাগজের সম্পাদক মইন উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক একসময় মধুর ছিল। কিন্তু দিন দিন এ সম্পর্ক অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে হলে শিক্ষক-অভিভাবকদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। কবি ও শিক্ষক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, শিক্ষকতা কোনো চাকরি নয়। শিক্ষকরা শির উঁচু করে সমাজ আলোকিত করবেন—এটাই একজন শিক্ষক হিসেবে প্রত্যাশা। তিনি বলেন, ইদানীং শিক্ষকদের এক ধরনের হেয় করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সুন্দর সমাজ কাঠামো তৈরির জন্য শিক্ষকদের আগের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
সিলেটের নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শামীম আল আজিজ লেলিন বলেছেন, শিক্ষা প্রতিটি জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীতে ইউরোপ, আমেরিকার দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারি জাতি এগিয়ে গেছে শিক্ষাকে সামনে রাখে।
বাংলাদেশে টেকসই শিক্ষাব্যবস্থা আমরা এখনো দেখি নাই। শিক্ষাব্যবস্থার একটা পরিবর্তন দেখেছি যার মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা রয়েছে। বাংলাদেশে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত এখন পর্যন্ত শিক্ষার গুণগত নীতিমালা প্রয়োজন।
মইনউদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবিদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, শিক্ষক দিবস মানে একান্ত শিক্ষকদের দিন। শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের দিন। এ দিবস থেকে নিজেদের অধিকার রক্ষায় যেমন সচেতন হতে হবে তেমনি মানবিক সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের আদর্শ সমাজ তৈরির শিক্ষা দিতে হবে।
বালাগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ লিয়াকত শাহ ফরিদী বলেছেন, বর্তমান বিশ্বে শিক্ষক এবং শিক্ষাদান প্রক্রিয়া একে অপরের পরিপূরক হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত একটি বিষয়। এ কারণে বিশ্বব্যাপী শিক্ষকতা পেশার পরিচর্যার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ছে। শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং পেশাকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বেতন-আবাসন, প্রশিক্ষণ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মপরিবেশ উন্নত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ নূর তাহের বলেছেন, শিক্ষকতা মহান পেশা, শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর—অনেকের কাছে ফাঁকা বুলি মনে হলেও এটাই সত্য। মহান পেশার মর্যাদা ধরে রাখতে হবে আমাদেরই। সর্বোপরি নৈতিকতার জায়গাটা ঠিক রাখতে হবে। নীতি আদর্শ ধরে রাখতে খুব কষ্ট করতে হয় না।
মন্তব্য করুন