দলীয় ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ চাইলেও দলীয় প্যানেলবিহীন ডাকসুকেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতি থাকবে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাকসু সংস্কার করে শিগগিরই ডাকসু নির্বাচন চান তারা।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এসব দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের দলীয় ছাত্র রাজনীতি চলবে না। শুধু দলীয় প্যানেলবিহীন ডাকসুকেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতি থাকবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে।
তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়; হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এই স্বপ্নকে ধূলিস্যাৎ করার জন্য কয়েকটি স্বার্থান্বেষী মহল এই প্ল্যাটফর্মকে দলীয়করণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। জুলাই বিপ্লবের কথা আমরা সবাই জানি যে, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারকে এই দেশ থেকে উৎখাত করেছে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা। আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে এবং সে আন্দোলনের বীজ বপন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আমাদের এটা মানতে হবে- এ দেশে একটি সরকার স্বৈরাচারী হয়ে উঠে কয়েকটি সিস্টেমের মাধ্যমে। তন্মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলীয় ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি অন্যতম, যেখানে বারবার এই সিস্টেমের পুঁজি করা হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
তারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন দলীয় ছাত্র সংগঠন যে সিস্টেম চালু করে রেখেছে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদিকে আবারও এ ক্যাম্পাসকে দলীয় রাজনৈতিক কার্যালয় বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে কয়েকটি দলীয় ছাত্র সংগঠন। বিগত সময়গুলোতে আমরা দেখেছি, হলগুলোতে গেস্টরুম, গণরুমের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর শারীরিক ও মানসিক প্রহসন চালানো হয় শুধু তাদের ফ্যাসিবাদী স্বার্থ হাসিল করার জন্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ধরনের নোংরা দলীয় রাজনীতির বিপক্ষে অবস্থান করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিরাজনীতিকীকরণের পক্ষে নয়; বরং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক নির্বাচন করার পক্ষে এবং সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।
এ সময় তার দুটি দফা তুলে ধরেন। দফা দুটি হলো- ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দিতে হবে। এসব দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার কথাও জানান তারা।
মন্তব্য করুন