শিক্ষা প্রশাসনে স্বৈরাচার সরকারের (আওয়ামী লীগ সরকার) রেখে যাওয়া দুর্নীতিবাজ, দলবাজ কর্মকর্তাদের দ্রুত বদলির দাবি জানিয়েছে ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মর্যাদা রক্ষা কমিটি’।
এ ছাড়া ক্যাডারে বিভিন্ন টায়ারে পদোন্নতি, বদলি ও পদায়ন নীতিমালা, পদ সৃজন, পদ আপগ্রেড, অর্জিত ছুটি ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি এস এম কামাল হোসেন।
এ সময় তিনি প্রত্যেক উপজেলায় একটি কলেজ জাতীয়করণের নামে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি করা ৩০০ কলেজের জাতীয়করণ বাতিলের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের পদায়নকৃত দলদাস ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ, রাষ্ট্র সংস্কার ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের দাবি জানানো হয়।
তারা প্রতিটি হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে এ আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী সকলকে জাতীয় বীরের মর্যাদা, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের নাম ও স্মৃতিফলক উন্মোচন, পাঠ্যবইয়ে এ বিপ্লবী সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে তা পাঠ্যভুক্ত করার দাবি জানান।
তারা বলেন, বিভিন্ন দপ্তর থেকে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের রেখে যাওয়া দলদাস ও দুর্নীতিবাজদের অপসারণ করা হলেও শিক্ষা প্রশাসনের সর্বস্তরে তারা এখনো বহাল তবিয়তে। এজন্য তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে।
ইতোমধ্যে বিগত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগীদের আবারো লাভজনক পদে পদায়ন শুরু হয়েছে, যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনা বিরোধী। তাই অবিলম্বে মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখা এবং শিক্ষা প্রশাসনের সকল স্তর ঢেলে সাজাতে হবে।
তারা আরও বলেন, শূন্যপদ না থাকার অজুহাতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারসহ অনেক ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি দেওয়া হয়। শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রেও সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের করতে হবে।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, শিক্ষা ক্যাডারে বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিদ্যমান। নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা ঘুরে-ফিরে মাউশি, ডিআইএ, ব্যানবেইস, নায়েম, শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবিসহ বিভিন্ন দফতর এবং ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলার প্রধান কলেজগুলোতে কর্মরত আছেন।
অপরদিকে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নিরীহ শিক্ষক-কর্মকর্তাগণ প্রত্যন্ত অঞ্চল, হাওর-দ্বীপ, পাহাড় এবং জেলা- উপজেলার ছোট কলেজে কর্মরত আছেন। এই বৈষম্য নিরসনে অবিলম্বে সুষ্ঠু বদলি পদায়ন নীতিমালা জারি করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ৫ম গ্রেড থেকে ৩য় গ্রেডে পদোন্নতি প্রদান এবং আনুপাতিক হারে গ্রেড-২ ও গ্রেড-১ পদ সৃষ্টি করে ৬ স্তরের পদসোপান তৈরি করার দাবিও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সহসভাপতি ও সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ জ ম রুহুল কাদীর। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি এস এম কামাল আহমেদ, অধ্যাপক মোহা. আবেদ নোমানী, অধ্যাপক কাজী ফারুক আহম্মদ, অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দিন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন