কোটা আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের স্থায়ী পুনর্বাসন এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতির যথাযথ বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচারের ব্যবস্থাকরণ, শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মৌন অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী মঞ্চ’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচি থেকে একটি প্রচারপত্র প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়, কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় আমরা সাধারণ ছাত্ররা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কোটা নিয়ে আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে অনেক প্রাণ ঝরে গেছে। এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনেক নাশকতা হয়েছে। আমরা সাধারণ ছাত্ররা রাজনীতি করতে আসিনি, আমাদের যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করতে এসেছিলাম। বর্তমানে ব্যাপারটি যে পর্যায়ে গেছে তাতে আমরা মর্মাহত এবং শঙ্কিত। চরম পরিতাপের বিষয় চলমান কোটা আন্দোলনে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল স্থানে নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা ও প্রাণহানির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা সকল শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
এতে আরও বলা হয়, চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার এই দাবিগুলো বাস্তবায়নকল্পে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থী মঞ্চের ৯ দফা দাবি উপস্থান করছি। দাবিগুলো হলো-
১. কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘটিত প্রত্যেক ছাত্রের প্রাণহানির নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
২. কোটা আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও সর্বপ্রকার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়াও মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়জন সমন্বয়ককে পরবর্তীতে কোনো প্রকার হয়রানি করা যাবে না।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাঙ্গনে বহিরাগত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে।
৪. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থী যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. কোটা আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারবর্গের স্থায়ী পুনর্বাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৬. শিক্ষা বান্ধবপরিবেশ নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বৈধ সিট নিশ্চিতকল্পে হল প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে হবে।
৮. কোটা আন্দোলনে অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে।
৯. শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযোগ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
মন্তব্য করুন