দেশব্যাপী কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় দফায় দফায় স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আবুল বাশারের স্বাক্ষরিত রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
পরীক্ষায় বিশেষ নির্দেশানায় বলা হয়েছে-
১। পরীক্ষা শুরুর ৩০ (ত্রিশ) মিনিট পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। ২। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
৩। ৩০ নম্বরের বহুনির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ৩০ মিনিট এবং ৭০ নম্বরের সৃজনশীল (CQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। * ব্যবহারিক বিষয় সম্বলিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২৫ মিনিট এবং ৫০ নম্বরের সৃজনশীল (CQ) পরীক্ষার ক) ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। * পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় পর্যন্ত চলবে। MCQ এবং CQ উভয় অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে- * সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী OMR শিট বিতরণ। * সকাল ১০টা বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ। * সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র (OMR শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ। (২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সময় ১০টা ২৫মিনিট)
(খ) দুপুর ২টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে- * দুপুর ১টা ৩০ মিনিট অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী OMR শিট বিতরণ। * দুপুর ২টা বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ। * দুপুর ২টা ৩০ মিনিট বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র (OMR শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ। (২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সময় ২টা ২০ মিনিট)
৪। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। ৫। পরীক্ষার্থীগণ তাদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট হতে সংগ্রহ করবে। ৬। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সরবরাহকৃত উত্তরপত্রে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি ওএমআর ফরমে যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই মার্জিনের মধ্যে লেখা কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না। ৭। পরীক্ষার্থীকে তত্ত্বীয়, বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক অংশে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পৃথকভাবে পাস করতে হবে। ৮। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশ পত্রে উল্লিখিত বিষয়/বিষয়সমূহের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ৯। কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ কলেজ প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না, পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে। ১০। পরীক্ষার্থীগণ পরীক্ষায় সাধারণ সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। ১১। পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে পারবে না।
এর আগে সকালে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনিবার্য কারণবশত আগামী ৪ আগস্ট থেকে অনুষ্ঠিতব্য সব বোর্ডের পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হলো। ১১ আগস্ট থেকে সব শিক্ষা বোর্ডের স্থগিত পরীক্ষা নতুন সময়সূচি অনুযায়ী শুরু হবে। স্থগিত হওয়া পরীক্ষার নতুন সময়সূচি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা গত ৩০ জুন শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১১ আগস্ট। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট থেকে ২১ আগস্টের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘটিত অস্থিরতায় থমকে যায় পুরো দেশ। সংঘাত-সহিংসতায় পুরো দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ১৮ জুলাই থেকে পহেলা আগস্ট পর্যন্ত চলমান এইচএসসি ও সমমানের আটটি বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
মন্তব্য করুন