২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো কোটা সংস্কার আন্দোলনে করছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের দিকে অভিমুখ হলে তাঁতীবাজার মোড়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড়েই বসে পড়েন।
টানা দুই ঘণ্টা ধরে তাঁতীবাজার মোড়ে অবস্থানকারী আন্দোলনকারীরা যেন মনোবল না হারায় সে জন্য স্লোগানের পাশাপাশি প্রতিবাদী গান কবিতা আবৃত্তি করছেন শিক্ষার্থীরা। জাতীয় কবি কাজী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করেন দাইয়ান নামের এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও সেলিম সর্দ্দার, বৃষ্টি সেন, অলিভসহ অনেকেই কবিতা আবৃত্তি এবং গান করেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘নো কোটা, নো ডিসক্রিমিনেশন’, ‘সংবিধানের মূল কথা, সবার জন্য সমতা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘সংগ্রাম না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, এই বাংলায় হবে না, বৈষম্যের ঠিকানা’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’ সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন এবং কোটাবিরোধী এসব স্লোগান দিতে শোনা যায়।
চার দফা দাবিতে এ আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
২. ‘১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজপথে শিক্ষার্থীরা সব সময় আছে। রাজপথে আমরা রক্ত দিব। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই হবে না। আমাদের অধিকার আমরা আদায় করব।
মন্তব্য করুন