শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে এইচএসসি পরীক্ষা চলল এক ঘণ্টা ২০ মিনিট। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় জড়িত দুই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষা কেন্দ্রে ভুলবশত সেট ২ এর পরিবর্তে সেট ৪ দিয়ে পরীক্ষা শুরু করা হয়। নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পার হওয়ার পরে কর্তব্যরত শিক্ষকরা বুঝতে পারলে নতুন সেট দিয়ে পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর অর্ধেকের কম সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে না পারায় এখন ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছেন পরীক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগীরা নড়িয়া উপজেলার ডিগ্রি ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি পরীক্ষার আগে উপজেলা প্রশাসন পরীক্ষার্থীদের জন্য দুই সেট প্রশ্ন পাঠায়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হল সুপারের মোবাইল ফোন খুদে বার্তা দিয়ে জানিয়ে দেন কোন সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ওই খুদে বার্তায় দেওয়া সেট নম্বর অনুযায়ী শিক্ষকেরা প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ইউএনওর খুদে বার্তা অনুযায়ী ২ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভুল করে ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয়। এ ভুলটি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর শিক্ষকদের নজরে আসে। তখন পরীক্ষার্থীদের পুনরায় ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয় এবং ওই প্রশ্ন অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে বলা হয়।
ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করায় পরীক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় অপচয় হয়। কিন্তু পরে আর তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন পরিক্ষার্থীরা। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী ৭০ নম্বরের পুরো উত্তর লিখতে পারেননি। এমনকি ভুলের কথা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরাও এড়িয়ে যান। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগকেও জানানো হয়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফাতেমা জানান, সঠিক সেটে তাদের ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তারা এ সংক্ষিপ্ত সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারেননি। এখন পরীক্ষার ফল খারাপ হলে এর দায় কে নেবে?
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাবে বলে জানিয়েছে।
ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের হল সুপার মনিরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘ভুল করে এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা বুঝতে পেরে সঠিক প্রশ্নের সেট সরবরাহ করেছেন। তবে পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র কালবেলাকে বলেন, ‘কেন্দ্রসচিব ও হল সুপারের ভুলে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এমন একটি ভুলের কথা তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানাননি। আর এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও রতন চন্দ্র দাসকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
মন্তব্য করুন