‘প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাকৃবি শাখা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ওই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এবং প্রতারণা ও বৈষম্যমূলক ‘প্রত্যয় স্কিমসহ’ আরও ৪টি স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল ও করের টাকায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বাকৃবি শাখার সভাপতি রিফা সাজিদা ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় রায় এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক অর্ণব দাস।
যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, কোনো দেশের বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক একটি মানবিক অধিকার হলো পেনশন ব্যবস্থা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যা নাগরিকদের জন্য সরকারের বাজেট থেকে করা হয়। দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে সত্যিকার অর্থে সেই ব্যবস্থা আজও গড়ে ওঠেনি। বরং সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে ‘সর্বজনীন পেনশন’ চালুর ঘোষণা বৈষম্যমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তারা আরও বলেন, গত ১৭ আগস্ট ২০২৩ সাল থেকে সরকার ‘সর্বজনীন পেনশন’ ব্যবস্থা চালু করেছে। আমাদের দেশে কয়েক কোটি মানুষের মাসিক আয় অর্পযাপ্ত হলেও সরকার ঘোষিত ৫টি পেনশন স্কিমের আওতায় ন্যূনতম মাসিক ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। এতে সরকার কোনো দায়িত্ব বহন করবে না, নিজেদের চাঁদা দিয়ে নিজেদের জন্য পেনশন নিশ্চিত করতে হবে। যা সত্যিকার অর্থে কোনো পেনশনই নয়, অনেকটা ব্যাংকের ডিপিএসর মতো ব্যাপার। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রণালয় ঘোষিত অন্য স্কিমগুলোর মতো ‘প্রত্যয় স্কিম’ও গভীর বৈষম্যমূলক। এ বছর জুলাইয়ের পর স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার চাকরিতে যারা যোগদান করবেন তাদের এ স্কিমে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পূর্বে চাকরিজীবীদের অবসরকালীন এককালীন অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা ছিল যেটি বর্তমান ঘোষিত ‘প্রত্যয় স্কিমে’ থাকবে কিনা সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলা হয়নি।
আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর্থিক বরাদ্দ সীমিত। শিক্ষকদের বেতন খুবই অপর্যাপ্ত, নেই যথাযথ পদমর্যাদা। যেখানে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো নিশ্চিত করার কথা ছিল সেটি না করে উল্টো সর্বজনীন পেনশনের নামে আর্থিক বরাদ্দ সংকোচনের নীতিমালা গ্রহণ করা হলো। যা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের শামিল। স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর এ ধরনের সরকারি বিধিবিধান জোরপূর্বক আরোপ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের উপরে সরাসরি আক্রমণ।
এই নীতিমালাকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একইসঙ্গে এ দাবিতে সারাদেশে গড়ে ওঠা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বাকৃবি শিক্ষকদের যে আন্দোলন চলছে তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।
মন্তব্য করুন