রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৩-২৪ সেশনের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল আগামী পহেলা জুলাই। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে রাবি শিক্ষকদের ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে সেটি আর হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস আদেশে জানানো হয়, আসন ফাঁকা থাকায় আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত নতুন সেশনের ভর্তি কার্যক্রমের সময় বৃদ্ধি হচ্ছে এবং ক্লাস শুরুর পরবর্তী সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৫ জুলাই।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও একাধিক শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন, ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
তাদের এ কর্মসূচির আহ্বানে একাত্মতা ঘোষণা করে স্বাক্ষর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮ শতাধিক শিক্ষক। এ ছাড়াও জানা যায়, এবার শিক্ষকেরা আন্দোলনে অনড় থাকবে। এদিকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত ক্লাস শুরুর নির্ধারণ করা হয়েছিল আগামী ১ জুলাই। শিক্ষকদের এই আন্দোলন কর্মসূচির পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ইউনিটে অনেক আসন ফাঁকা থাকায় ক্লাস শুরু হচ্ছে ১৫ দিন পিছিয়ে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন ব্যবস্থায় সরকারের আইন, বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিস ও সশস্ত্রসহ অন্যান্য বিভাগে পেনশন চালু থাকলেও থাকছে না বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমন হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পেশায় মেধাবী শিক্ষার্থী আসবেই না। এ প্রজ্ঞাপন জারি করার পর থেকেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। আমাদের ধারণা ছিল এত দিনে আমাদের দাবি নিয়ে উচ্চ মহলে আলোচনা হবে। কিন্তু আমরা তার কোনো প্রতিফলন পাইনি। তাই আমরা এ কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছি।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও এ ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্লাহ বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়ার সময় ১১ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ক্লাস শুরু হবে আগামী ১৫ জুলাই।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বাস্তব অবস্থা আমাদের সবারই বিবেচনায় রাখা দরকার। শিক্ষার্থীদের কোনো হয়রানির শিকার যেন না হতে হয় এটা আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন সুষ্ঠু পরিবেশে উচ্চ শিক্ষা জীবন শুরু করতে পারে। তবে কাকতালীয়ভাবে শিক্ষক সমিতির কর্মসূচির সঙ্গে পহেলা জুলাই তারিখ মিলে গেছে। আমাদের অনেক সিট ফাঁকা রয়েছে তার জন্যই মূলত ভর্তি ও ক্লাস পেছানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন