চলমান চতুর্থ ও আসন্ন পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের সময়কালে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে বিশ্ববাজারের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরির জন্য ৪০ হাজার শিক্ষার্থী, ২ হাজারের অধিক শিক্ষক এবং ৬ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিবি) ও ভৌত অবকাঠামোগত মাস্টার প্ল্যান (পিএমপি) নামে দুটি প্ররিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। যা ২০৪৫ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়। পাল্টে যাবে এর একাডেমিক ও ভৌতিক চিত্র।
বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল তার অভিভাষণে এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিশন এবং এই সম্পর্কিত মিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রস্তাবিত একাডেমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিবি) ও ভৌত অবকাঠামোগত মাস্টার প্ল্যান (পিএমপি) এই দুটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একাডেমিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০৩৫ সালের মধ্যে এই বিদ্যাপীঠ উচ্চতর গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে, যা কার্নেগির শ্রেণিবিভাজন অনুযায়ী আর টু বিশ্ববিদ্যালয়। এই ধারাবাহিকতায় ২০৪৫ সালের মধ্যে এটি রূপান্তরিত হবে গবেষণা-প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় হবে। প্রস্তাবিত একাডেমিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে অনেক বিভাগের শিক্ষার্থী-সংখ্যা যৌক্তিক পর্যায়ে আনা হবে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কিছু নতুন বিভাগও খোলা হবে।
তিনি বলেন, ভৌত অবকাঠামোগত পরিকল্পনা (পিএমপি) সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে আধুনিক গবেষণাগারসহ একাডেমিক ফ্লোর স্পেস ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ বর্গফুট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ বর্গফুট হবে। লাইব্রেরির সুবিধা ১ হাজার ৫০০ জন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার জন হবে এবং নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা ৩৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ শতাংশে উন্নীত হবে। মাস্টার প্ল্যানে প্রদর্শিত ভবনসমূহ বহুতলবিশিষ্ট হওয়ায় ভবনসমূহের ফুটপ্রিন্ট ২৭ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২২ শতাংশে নেমে আসবে। ফলে সবুজ চত্বর ও উন্মুক্ত স্থান বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া প্রণীত মাস্টার প্ল্যানে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল-লেন নির্মাণ করে শিক্ষার্থীবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বৃষ্টির পানি ধারণ, সৌরশক্তি উৎপাদন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, জলাধার সংরক্ষণ, সৌন্দর্যবর্ধন, বিদ্যমান খেলার মাঠের সংস্কার, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ ও সুইমিংপুল নির্মাণ করা হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই পরিকল্পনার ফেইজ-১ সংক্রান্ত অবকাঠামো উন্নয়নের একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন। সেখানে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন ও আধুনিক লাইব্রেরি নির্মাণ এবং উন্নতমানের গবেষণাগার স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন