কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন ও লেজুড়বৃত্তিক অবস্থানের অভিযোগে একযোগে পদত্যাগ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সব নেতারা।
রোববার (২৩ জুলাই) বিকেলে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে সংগঠনের নেতারা এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের ঢাবি শাখার সভাপতি আসিফ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গড়ে ওঠা একটি ছাত্র সংগঠন। কোনো প্রকার দলীয় লেজুড়বৃত্তি না করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকাই ছিল যার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনা ও অনুচ্ছেদ ৮ (লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য)-এর ১ নম্বর ধারায় দলীয় দাসত্ব ও লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির বাইরে স্বাধীন ধারায় ছাত্র রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১০ জুলাই ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনা ও অনুচ্ছেদ ৮ এর ১ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক গণঅধিকার পরিষদের লেজুড়বৃত্তি করার অভিযোগ উত্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এ ছাড়াও লিখিত অভিযোগ জানান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করায়, গঠনতান্ত্রিকভাবে তাদের পদ শূন্য হলেও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব। অভিযোগ পরবর্তী গত দুই সপ্তাহেও কেন্দ্রীয় পরিষদ ওই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্র ও ছাত্রসমাজের প্রতি প্রতিশ্রুত আদর্শের বিচ্যুতি ঘটেছে বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায় লেজুড়বৃত্তিহীন ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা একযোগে পদত্যাগ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন : ভাড়া নয়, এবার কার্যালয় কিনবেন নুর
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির মেয়াদ ছয় মাস পূর্ণ না হতেই ছাত্র অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঢাবি শাখার অন্তঃকোন্দল লক্ষ্য করা যায়। কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিলে তাদের কেন্দ্রীয় পদ শূন্য হয়েছে মর্মে জানতে চায় ঢাবি কমিটির নেতারা। পরবর্তীতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করতে চাইলেও কেন্দ্রীয় কমিটির অবহেলা ও সিদ্ধান্ত জানাতে সময়ক্ষেপণ করায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ঢাবি অধিকার পরিষদের সব নেতারা।
মন্তব্য করুন