রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল গালিব আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ২০১৪-১৫ সেশনে। প্রথম বর্ষ পেরোতে পারলেও পার হতে পারেননি দ্বিতীয় বর্ষ। এর আগেই হয়ে যান ‘ড্রপ আউট’। এরপরে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পাস সনদ দেখিয়ে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তির আবেদন করেন। কিন্তু তার ভর্তি বাতিল করে বিভাগটি।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভর্তির জন্য যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পাসের যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন আসাদুল্লা-হিল গালিব, সেটি নকল।
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুল্লা-হিল-গালিব ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ভুয়া সনদে' রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। এটি আংশিক ও অসম্পূর্ণ তথ্য। প্রকৃতপক্ষে ওই ব্যক্তি এই বিভাগের শিক্ষার্থী নন।
অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স প্রোগ্রামের জুলাই ২০২১ সেশনের ছাত্র (আইডি নং: ২৩১০০৪৬২১০) হিসেবে ভর্তির আবেদন করেছিলেন। তবে তার জমাকৃত অনার্সের সার্টিফিকেটে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিষয়টি যাচাইপূর্বক গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স প্রোগ্রামের জরুরি সভায় ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভবিষ্যতে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যাতে তথ্যগত বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা যত্নশীল থাকবেন বলে প্রত্যাশা করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল গালিবকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, একাডেমিক কমিটির সব শিক্ষকের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় জাল সার্টিফিকেট তৈরির একাধিক চক্র আছে। এ ধরনের চক্র টাকার বিনিময়ে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদালয়ের ভুয়া সনদ তৈরি করে। সনদগুলো এমনভাবে বানানো হয়, যেটি খালি চোখে আসল-নকল বোঝা ভীষণ কঠিন। এসব সার্টিফিকেটই সাধারণত ‘নীলক্ষেত বিশ্ববিদ্যালয়’ এর সার্টিফিকেট নামে পরিচিত। যদিও জাল সার্টিফিকেট তৈরি ও বেচা-কেনার সঙ্গে জড়িত একাধিক চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারপরও থেমে নেই এ ধরনের তৎপরতা।
মন্তব্য করুন